বন্ধুর এমবিবিএস সার্টিফিকেটে পেইন্টার সেজে চিকিৎসা, মৃত্যু ঘটতেই ফাঁস প্রতারণা

মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে একজন রংমিস্ত্রি বছরের পর বছর ধরে ডাক্তার সেজে রোগীদের চিকিৎসা করে আসছিল। ঘটনাটি ফাঁস হয় এক বৃদ্ধ রোগীর মৃত্যু পরবর্তী তদন্তে। জানা গেছে, এই ভুয়া চিকিৎসক বন্ধুর নাম ও প্রমাণপত্র ব্যবহার করে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে হাসপাতাল চালাচ্ছিলেন।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই ঘটনার সূত্রপাত। রেল কর্মকর্তা মনোজ কুমার মহাওয়ার তাঁর মা শান্তি দেবী মহাওয়ারকে চিকিৎসার জন্য জব্বলপুরের নেপিয়ার টাউন এলাকায় অবস্থিত মার্বেল সিটি হাসপাতালের ভর্তি করান। চিকিৎসার মধ্যেই মায়ের মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত্যুর পরে মনোজ যখন মেডিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনা করেন, তখন রিপোর্টে থাকা চিকিৎসকের নাম বৃজরাজ উইকে দেখে সন্দেহ জাগে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, যিনি চিকিৎসা করেছিলেন তিনি আদতে একজন পেইন্টার।
মনোজের তদন্তে উঠে আসে, ব্রিজরাজ আসলে পেইন্টিং-এর কাজ করেন এবং চিকিৎসক হিসাবে যার ছবি হাসপাতালে লাগানো ছিল, তিনি হলেন ব্রিজরাজের স্কুলজীবনের বন্ধু সত্যেন্দ্র সিং। অভিযোগ অনুযায়ী, সত্যেন্দ্র বছর কয়েক আগে ‘পড়াশোনায় সাহায্যের’ কথা বলে ব্রিজরাজের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির মার্কশিট এবং জাতি শংসাপত্র নিয়েছিলেন। পরে সেই কাগজপত্রে ভুয়া পরিচয়ে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে চিকিৎসা শুরু করেন।
এই ঘটনার ভিত্তিতে মনোজ মহাওয়ার জব্বলপুরের ওমতি থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। সিএসপি সোনু কুর্মি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত চিকিৎসক পলাতক এবং তদন্ত চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, রোগীর অবস্থা ভর্তি হওয়ার সময়েই সংকটজনক ছিল এবং সমস্ত নিয়ম মেনেই চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছিল।
এই ঘটনার পর, আবারও রাজ্যের প্রাইভেট হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও মেডিকেল শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রোগীর পরিবার বলছে, একজন রংমিস্ত্রি যেভাবে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছিল, তা শুধু অবিশ্বাস্যই নয়, অপরাধও বটে।