পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ভয়াবহ ঝড়-বৃষ্টি, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

না গুলি, না বোমা—তবুও পাকিস্তানে প্রকৃতির রোষে ধ্বংস, ২০ জনের মৃত্যু, ১৫০-এরও বেশি আহত
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে গত শনিবার তীব্র ঝড় এবং মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যা পুরো এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে। কোনও যুদ্ধ বা সন্ত্রাসী হামলা না ঘটলেও প্রকৃতির এই আঘাতে অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি এবং ১৫০-র বেশি আহতের খবর পাওয়া গেছে।
শক্তিশালী ঝড় ও বৃষ্টির জেরে অনেক এলাকায় বাড়ির ছাউনি উড়ে গেছে, পুরোনো বাড়ির দেয়াল ভেঙে পড়েছে এবং রাস্তায় লাগানো বিজ্ঞাপন প্যানেল ও সোলার প্যানেল পর্যন্ত উল্টে গেছে। বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি পাঞ্জাবে হয়েছে, যেখানে আবহাওয়ার এই ক্রুদ্ধ রূপ জনজীবন ব্যাপকভাবে ব্যাহত করেছে।
ফ্লাইটেও পড়ল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছায়া
পাঞ্জাব সরকারের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, মৃতের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছেন। দুর্ঘটনার পেছনে পুরোনো অবকাঠামো, দুর্বল বিলবোর্ড এবং বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়াকে প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়েছে। লাহোর, ঝেলম, সিয়ালকোট ও মুজফফরগড় সহ বিভিন্ন জেলায় এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর এসেছে। ঝড়-বৃষ্টি শুধু সড়ক চলাচলেই বিঘ্ন ঘটায়নি, আকাশেও ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। করাচি থেকে লাহোরগামী একটি ফ্লাইট FL-842 খারাপ আবহাওয়ার কারণে আটকে পড়ে; যাত্রীরা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে কোরানের আয়াত পাঠ ও কাঁদতে দেখা গেছে, ফ্লাইট শেষ পর্যন্ত করাচিতে ফিরিয়ে আনা হয়।
দুই দিন চলবে এই পরিস্থিতি, সতর্কতা জারি
ইসলামাবাদ ও খাইবার পখতুনখোয়াতেও ঝড় ও শিলাবৃষ্টির প্রভাব পড়েছে, তবে সেখানে প্রাণহানির খবর নেই। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গেছে এবং ফসলও নষ্ট হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে অনেক সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ পরবর্তী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টি এবং শক্তিশালী বাতাসের সতর্কতা দিয়েছে। মোড়ারওয়ে পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকটি সড়ক বন্ধ রেখেছে। পাঞ্জাবের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ (PDMA) পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখছে এবং দ্রুততর ত্রাণকাজ চলছে।