পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নামকরণ বিবাদে জগন্নাথ মন্দিরের শব্দ পেটেন্ট করছে ওড়িশা

পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নামকরণ বিবাদে জগন্নাথ মন্দিরের শব্দ পেটেন্ট করছে ওড়িশা

পুরী, ওড়িশা: পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে “জগন্নাথ ধাম” নামকরণ নিয়ে চলমান বিবাদের প্রেক্ষাপটে ওড়িশার শ्री জগন্নাথ মন্দির প্রবন্ধন সমিতি (এসজেটিএমসি) মন্দির সংশ্লিষ্ট একাধিক শব্দ ও লোগোর পেটেন্ট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার পুরীর গজপতি মহারাজা দিব্যসিংহ দেওয়ের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সমিতির বৈঠকে এই প্রস্তাব পাস হয়েছে। উদ্দেশ্য, ১২শ শতকের মন্দিরের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয় বাণিজ্যিক অপব্যবহার থেকে রক্ষা করা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ আহুজা, এসজেটিএ-র প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ পাধি, পুরীর জেলা প্রশাসক সিদ্ধার্থ শংকর স্বাইন ও পুলিশ সুপার ভিনেট অগ্রওয়াল প্রমুখ। সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, “মহাপ্রসাদ”, “শ্রীমন্দির”, “শ্রী জগন্নাথ ধাম”, “শ্রীক্ষেত্র” ও “পুরুষোত্তম ধাম” শব্দগুলির পেটেন্টের জন্য শীঘ্রই আবেদন করা হবে। এ প্রসঙ্গে অরবিন্দ পাধি সাংবাদিকদের বলেন, “এই পদক্ষেপ মন্দিরের আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ ও শব্দভাণ্ডারের অবৈধ ব্যবহার রোধে আইনি ঢাল হিসেবে কাজ করবে।”

বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দীঘায় নির্মিত মন্দিরটিকে “জগন্নাথ ধাম” অভিধা দেওয়ার প্রয়াস। গজপতি মহারাজা দিব্যসিংহ দেওয় স্পষ্ট করেন, “হিন্দু শাস্ত্র ও শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যের পরিপন্থী এই নামকরণ। তবে দুই রাজ্য সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই সমাধান কাম্য।” পক্ষান্তরে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

ঐতিহ্য বনাম আধুনিকতা: বিশ্লেষকদের মতে, ধর্মীয় শব্দের পেটেন্টিং জটিল আইনি বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। তবে ওড়িশার এই সিদ্ধান্ত তাদের সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে একটি মাইলফলক। পুরীর স্থানীয়দের একাংশ এটিকে “অবলম্বন হিসাবে স্বাগত জানালেও, অন্যরা প্রশ্ন তুলেছেন: “ধর্মীয় শব্দ কি পেটেন্টের আওতায় আসতে পারে?” উত্তর খুঁজতে এখন চোখ আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ত্ব আইনের দিকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *