“হিন্দি-চিনি ভাই ভাই” থেকে বিশ্বাসঘাতকতা: ১৯৬২-র যুদ্ধের পর নেহরুর মর্মান্তিক আত্মসমর্পণ

নয়াদিল্লি, ২৭ মে: “শান্তি আর সহাবস্থানের প্রতীক” – এমনই ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। কিন্তু ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের পর সেই মানুষটিই যেন ভিতর থেকে ভেঙে পড়েছিলেন। গোপন নথি ও সহকর্মীদের স্মৃতিচারণ বলছে, চীনের বিশ্বাসঘাতকতা তাঁকে গভীরভাবে আহত করেছিল, এমনকী তিনি ইস্তফাও দিতে চেয়েছিলেন। আজ, তাঁর ৬০তম প্রয়াণদিবসে ফিরে দেখা যাক সেই অধ্যায়।
১৯৬২ সালের ২১ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল চীন, কিন্তু ততক্ষণে ভারত হারিয়েছে আকসাই চিনের বড় অংশ। নেহরুর “হিন্দি-চিনি ভাই ভাই” নীতিকে পদদলিত করে চীনের এই আক্রমণ ছিল এক রক্তক্ষরণের মতো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার প্যাটেল আগেই সতর্ক করেছিলেন: “মাওয়ের চীন অপ্রতিরোধ্য আগ্রাসী”। কিন্তু নেহরু ১৯৫৪ সালের পঞ্চশীল চুক্তিতে স্বাক্ষর করে তিব্বতকে চীনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ফলাফল? ১৯৬২-র অক্টোবরে লাদাখ ও অরুণাচলে একযোগে হামলা। রাশিয়া ও আমেরিকা নিরব থাকায় ভারত孤立 হয়ে পড়েছিল।
যুদ্ধের পর নেহরুর স্বাস্থ্য стремительно ভেঙে পড়ে। ৭৩ বছরের এই নেতা আগে যেখানে প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা কাজ করতেন, সেখানে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। “তিনি নিজেকে অপরাধী ভাবতে শুরু করেছিলেন,” লিখেছেন তাঁর ব্যক্তিগত সচিব এমও মাথাই। ১৯৬৪ সালের ২৭ মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে প্রায় দেড় বছর তিনি জনসমক্ষে কমই আসতেন। বিস্ময়ের বিষয়, শত্রুরাষ্ট্র পাকিস্তানও তাঁর মৃত্যুতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখেছিল – এক অভূতপূর্ব ঘটনা।
ইতিহাসের পাঠ: বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৬২-র যুদ্ধ ভারতের কূটনৈতিক наивность চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল। তবে নেহরুর সমর্থকরা মনে করেন, তাঁরই প্রতিষ্ঠিত IIT ও ISRO পরবর্তীতে ভারতকে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলে। আজকের চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই ইতিহাস নতুন করে ভাবনার খোরাক জোগায়।