অযোধ্যার রাম দরবারের নেপথ্যে এক অসাধারণ গল্প: প্রতিদিন ২ ঘণ্টা পরিক্রমা, তারপর ১০ ঘণ্টা কাজ

অযোধ্যা: অযোধ্যায় নবনির্মিত রাম মন্দিরের প্রথম তলে এখন প্রভু শ্রীরাম, মাতা সীতা, লক্ষ্মণ এবং হনুমানজির অপূর্ব রাম দরবার সম্পূর্ণ দিব্যতা নিয়ে বিরাজমান। এই রাম দরবার শুধুমাত্র একটি স্থাপত্যের নিদর্শন নয়, এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক গভীর সাধনা ও ভক্তির গল্প। রাজস্থানের প্রখ্যাত ভাস্কর সত্যনারায়ণ পাণ্ডে তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে পাথরকে জীবন্ত করে তুলেছেন।
রাম দরবারের নেপথ্যে সত্যনারায়ণের সাধনা
সত্যনারায়ণ পাণ্ডে টানা আট মাস ধরে প্রতিদিন দু’ঘণ্টা প্রভু রামের পরিক্রমা করতেন। এরপর শুরু হতো তাঁর ১০ ঘণ্টার কঠোর পরিশ্রম— রাম দরবারের মূর্তিগুলো গড়ার কাজ। সত্যনারায়ণ বলেছেন, “এটা শুধু মূর্তি তৈরি নয়, এটা ছিল আমার তপস্যা। মন পুরোপুরি নির্মল না হলে পাথরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা যায় না।”
তিনি মোট ৫৪০ বার পরিক্রমা করেছেন। প্রতিটি পরিক্রমার পর এক ঘণ্টা ধরে রামচরিতমানস পাঠ করতেন, তারপর শুরু করতেন প্রভুর স্বরূপ গড়ার কাজ। এই প্রক্রিয়া কয়েক মাস ধরে চলেছিল, আর তার ফলস্বরূপই তৈরি হয়েছে এই বিশাল রাম দরবার।
রাম দরবারের বিগ্রহসমূহ
বর্তমানে এই মূর্তিগুলি রাম মন্দিরের সিংহাসনে স্থাপিত হয়েছে। রাম, সীতা, লক্ষ্মণ এবং হনুমানজির মূর্তিগুলি বিভিন্ন ভঙ্গিমায় দেখা যাচ্ছে। তাঁদের সাথে ঋষি, বানর সেনাপতি এবং দরবারের গণ্যমান্য চরিত্রদের মোট ১৮টি মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। রাম মন্দির ট্রাস্টের মতে, এই মূর্তিগুলি কেবল শিল্পকর্ম নয়, এগুলি শাশ্বত ভক্তির জীবন্ত রূপ।
শেষ্ঠাবতার মন্দিরের মূর্তি স্থাপন
এর পাশাপাশি আরও একটি সুখবর আছে। রাম জন্মভূমি চত্বরে নির্মাণাধীন শেষ্ঠাবতার মন্দিরের মূর্তিগুলিও অযোধ্যায় পৌঁছে গেছে। এগুলির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে ৫ জুন, গঙ্গা দশেহরা-র পবিত্র দিনে। তাই পরের বার যখন আপনি রামলালার দর্শনে যাবেন, তখন শুধু মূর্তি দেখবেন না, সেই তপস্যা, সেই পরিক্রমা এবং সেই সাধনাকেও নমন করবেন, যা পাথরকে প্রভু রূপে পরিণত করেছে।