নৈনিতালের দুঃস্বপ্ন: চমকপ্রদ ঘটনার পর পর্যটকশূন্য নৈনিতাল!

একসময় পর্যটকদের কোলাহলে মুখরিত নৈনিতাল এখন ভীতিকর নীরবতার সাক্ষী, যা সাম্প্রতিক पहलগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর কাশ্মীরের মতোই একাকী হয়ে পড়েছে। উত্তরাখণ্ডের এই মনোরম শৈলশহরটি পর্যটনে এক অভূতপূর্ব মন্দা অনুভব করছে, যেখানে রাস্তাঘাট জনশূন্য, ট্যাক্সিগুলো অলসভাবে দাঁড়িয়ে, নৌকাগুলো যাত্রীবিহীনভাবে ভাসছে, এবং সাধারণত প্রাণবন্ত মল রোডও অদ্ভুতভাবে খালি। পর্যটকদের এই ব্যাপক পতন স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগের ঢেউ তুলেছে, যাদের জীবিকা পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। যদিও ধীরে ধীরে কিছু পর্যটক ফিরে আসছেন, তবে মে এবং জুনের মতো পিক সিজনে সাধারণত যে সংখ্যক পর্যটক দেখা যায়, তার ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি বর্তমান সংখ্যা।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা হোটেল বুকিংয়ে স্পষ্ট। মে এবং জুন মাস ঐতিহ্যগতভাবে দিল্লী-এনসিআর, পাঞ্জাব, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র থেকে তীব্র গরম থেকে বাঁচতে আসা পর্যটকদের আকর্ষণ করে, কিন্তু এই বছর মাত্র ১০-১৫% বুকিং রিপোর্ট করা হচ্ছে, যেখানে গত বছর ৯০% বুকিং ছিল। নৈনিতাল হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন অনুমান করছে যে পর্যটন শিল্পের ₹৬০ কোটিরও বেশি ক্ষতি হয়েছে, যা হোটেল ব্যবসায়ী, ট্যাক্সি চালক, নৌকা চালক এবং দোকানদারদের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এই মন্দার প্রধান কারণ ছিল ১লা মে ঘটে যাওয়া একটি ভয়াবহ ঘটনা, যেখানে এক ১২ বছর বয়সী শিশুকে ৬০ বছর বয়সী মোহাম্মদ উসমান নামে এক ব্যক্তি যৌন নির্যাতন করে। এই ঘটনা ব্যাপক প্রতিবাদ ও ভাঙচুর সৃষ্টি করে, কিছু বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে এবং মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও একটি মসজিদে হামলা চালানো হয়। এই ঘটনার ভিডিওগুলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা সম্ভাব্য পর্যটকদের মধ্যে ভয় তৈরি করে এবং ব্যাপক বুকিং বাতিলের কারণ হয়। এই স্থানীয় উদ্বেগের পাশাপাশি, পাহালগামের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা উদ্বেগও পর্যটকদের সতর্ক করেছে, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান খরচ, টোল ফি বৃদ্ধি, তীব্র যানজট এবং পর্যটন পুনরুজ্জীবনে সরকারি হস্তক্ষেপের অভাবের কারণে পর্যটকরা কৌসানি, ভীমতাল এবং মুক্তেশ্বর-এর মতো বিকল্প গন্তব্যে যাচ্ছেন।