সুই-সুতোয় স্বপ্ন বুনছে রাজস্থানের থার: মহিলারা কীভাবে বদলে দিচ্ছেন গ্রামবাংলার চিত্র

রাজস্থানের থর মরুভূমি অঞ্চলের গ্রামীণ নারীরা এক অসাধারণ বস্ত্র বিপ্লব ঘটাচ্ছেন। একসময় মূল্যহীন বলে বিবেচিত ‘আক’ গাছ এখন তাদের জীবনযাত্রার মান বদলে দিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত এই নারীরা ক্ষেত থেকে বুনো আক গাছের ফল সংগ্রহ করছেন, যা থেকে তৈরি হচ্ছে এক নতুন ধরনের টেকসই তন্তু। এটি শুধু তাদের উপার্জনের পথই খুলে দেয়নি, বরং টেকসই ফ্যাশনের জগতেও এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বারমেরের এই বস্ত্র বিপ্লবের নেপথ্যে রয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনার এবং তৃণমূল স্তরের পরিবর্তনকারী রুমা দেবী। তার ‘রুমা দেবী ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে তিনি নারীদের আক ফলের গুরুত্ব এবং তা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। এই উদ্যোগ পশ্চিমা রাজস্থানের অনুর্বর ভূমিকে গ্রামীণ নারীTudore রূপান্তর করছে। সংগৃহীত আক ফল থেকে তিন ধরনের পণ্য তৈরি হয়—তন্তু থেকে তৈরি হয় উষ্ণ ও হালকা কাপড়, যা কম্বল, জ্যাকেট এবং সামরিক স্লিপিং ব্যাগে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ থেকে ঔষধি তেল নিষ্কাশন করা হয়, আর ফলের আবরণ কাগজ তৈরিতে কাজে লাগে।
রুমা দেবীর এই সাহসী পরীক্ষা আর্থিক স্বাবলম্বীতার এক মডেল তৈরি করেছে। প্রথমদিকে আক ফল সংগ্রহে সমস্যা হলেও, এখন এটি বারমের, জয়সালমের, যোধপুর, বিকানেরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণে সংগৃহীত হচ্ছে। সংগৃহীত ফল প্রক্রিয়াকরণের জন্য নয়ডায় পাঠানো হয়, তবে অদূর ভবিষ্যতে রাজস্থানেই একটি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এই নারীরা প্রতি কিলোগ্রাম আক ফলের জন্য ২৫ টাকা পান, যা তাদের দৈনিক ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা উপার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে। সরকারের টেক্সটাইল মন্ত্রক এবং সেন্ট্রাল কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন এই প্রকল্পে সহায়তা করছে, যা আকের তন্তুকে একটি টেকসই, স্থানীয় এবং ক্ষমতায়নকারী কাঁচামাল হিসেবে চিহ্নিত করেছে।