১২ বছর পর মেয়েরা হঠাৎই হয়ে যায় ছেলে! এক অদ্ভুত গ্রামের রহস্য

ল্যাটিন আমেরিকার ডমিনিকান রিপাবলিকের সালিনাস গ্রাম এক অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী। এই গ্রামের মেয়েরা ১২ বছর বয়স পেরোলেই ধীরে ধীরে ছেলেতে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। তাদের শারীরিক গঠনে পরিবর্তন আসে এবং তারা পুরুষের অবয়ব ধারণ করে। শত শত বছর ধরে এই ঘটনা ঘটে চলেছে সালিনাস গ্রামে, যা স্থানীয়দের কাছে এক বিস্ময়। জন্মগতভাবে মেয়ে হিসেবে বেড়ে ওঠা শিশুরা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছানোর পর পুরুষে পরিবর্তিত হওয়ায় এই গ্রামটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে।
বিশেষজ্ঞরা এই রহস্যের কারণ খুঁজতে গবেষণা চালিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, গর্ভকালীন একটি বিশেষ এনজাইমের অভাবে এই ঘটনা ঘটে। ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন নামক হরমোনের অভাবে গর্ভস্থ পুরুষ শিশুর জননাঙ্গ সঠিকভাবে বিকশিত হয় না, ফলে জন্মের সময় তাদের দেখতে মেয়েদের মতো লাগে। ১৯৭৯ সালে ডা. মাইকেল মোসলে প্রথম এই বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি জানান, এই শিশুরা আসলে পুরুষ শিশু, যাদের শারীরিক গঠনগত ত্রুটির কারণে এমনটি হয়। ১২ বছর বয়সের পর সেই হরমোন সক্রিয় হয়ে উঠলে তাদের পুরুষাঙ্গ গঠিত হয় এবং তারা পূর্ণাঙ্গ পুরুষে রূপান্তরিত হয়।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গ্রামের বাসিন্দারা পার্শ্ববর্তী গ্রামে বিবাহ করার একটি উপায় খুঁজে বের করেছেন। এই পদ্ধতি কিছুটা হলেও গ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাহায্য করেছে। যদিও এই অদ্ভুত ঘটনা আজও বিজ্ঞানীদের কাছে এক গবেষণার বিষয়, তবুও সালিনাস গ্রাম ধীরে ধীরে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। এই বিশেষ শারীরিক অবস্থা, যা ‘স্যুডোহার্মাফ্রোডিটিজম’ নামে পরিচিত, তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।