চালকের নিরাপত্তার নতুন হাতিয়ার: ক্লান্তি মাপার ইলেকট্রনিক ট্যাটু!

মার্কিন বিজ্ঞানীরা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। তারা একটি ইলেকট্রনিক ফেস ট্যাটু তৈরি করেছেন, যা মস্তিষ্কের ক্লান্তি পরিমাপ করতে সক্ষম। এই ওয়্যারলেস এবং অস্থায়ী ট্যাটু তাৎক্ষণিকভাবে মস্তিষ্কের সংকেত পড়ে ফলাফল জানাতে পারে। এটি বিশেষ করে ট্রাক চালক এবং অন্যান্য পেশাদারদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে, যারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার ফলে মানসিক ক্লান্তির শিকার হন। এর ফলে দুর্ঘটনা হ্রাস পেতে পারে এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
এই ট্যাটুটি পরতে কোনো ভারী হেডগিয়ারের প্রয়োজন হয় না এবং এটি মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ পরিমাপ করে। এটি ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (EEG) এবং ইলেকট্রোওকুলোগ্রাফি (EOG) প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোখের গতিবিধিও ট্র্যাক করতে পারে। টেক্সাস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নানশু লু এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, মানুষ দ্রুত বিকশিত প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তার মতে, মানুষ তখনই সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করে যখন তারা একটি সুষম মানসিক অবস্থায় থাকে, যাকে ‘গোল্ডিলকস জোন’ বলা হয়, যেখানে অতিরিক্ত চাপ বা বিরক্তি থাকে না।
ঐতিহ্যগতভাবে, মানসিক ক্লান্তি পরিমাপের জন্য নাসা টাস্ক লোড ইনডেক্স-এর মতো দীর্ঘ সমীক্ষা ব্যবহার করা হতো, যা সময়সাপেক্ষ ছিল। তবে এই নতুন ইলেকট্রনিক ট্যাটুটি হালকা ও স্টিকারের মতো সেন্সর ব্যবহার করে ত্বকে আরামদায়কভাবে বসে এবং পরিষ্কার সংকেত প্রদান করে। গবেষকরা ছয়জন ব্যক্তির উপর এটি পরীক্ষা করেছেন এবং দেখেছেন যে মানসিক চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের থিটা এবং ডেল্টা তরঙ্গ বৃদ্ধি পায়, যা মানসিক ক্লান্তির লক্ষণ। যদিও বর্তমানে এটি শুধুমাত্র লোমহীন ত্বকে কাজ করে, গবেষকরা এটিকে কালি-ভিত্তিক সেন্সরের সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছেন যাতে এটি চুলের ত্বকেও কাজ করতে পারে। এই ট্যাটুটি ঐতিহ্যবাহী EEG সরঞ্জামের চেয়ে অনেক সস্তা এবং সকলের জন্য সহজলভ্য হতে পারে।