গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে সংবেদনশীল সময়, যখন মায়ের জীবনযাপন সরাসরি গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশকে প্রভাবিত করে। এই সময়ে সিগারেট ও মদ্যপানের মতো ক্ষতিকর অভ্যাস শিশুর জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইড শিশুর অক্সিজেন সরবরাহে বাধা দেয়, যার ফলে জন্মের সময় ওজন কম হওয়া, অকাল প্রসব, বা প্লাসেন্টা প্রিভিয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি শিশুর পরবর্তী জীবনে হাঁজল, শ্বাসকষ্ট বা আচরণগত সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। প্যাসিভ স্মোকিংয়ের ক্ষেত্রেও গর্ভপাত বা জন্মগত ত্রুটির সম্ভাবনা থাকে, যদি মা ধূমপান না করলেও ধোঁয়াযুক্ত পরিবেশে থাকেন। এই ঝুঁকিগুলো মা ও শিশুর জীবনকে বিপন্ন করতে পারে।

মদ্যপানের প্রভাব আরও ভয়াবহ। অ্যালকোহল গর্ভনালীর মাধ্যমে ভ্রূণের শরীরে প্রবেশ করে মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে, যার ফলে ‘Fetal Alcohol Spectrum Disorder (FASD)’ হতে পারে। এর ফলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি কমে, মুখমণ্ডলে বিকৃতি, শেখার সমস্যা ও মনোযোগের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এমনকি অল্প পরিমাণ অ্যালকোহলও শিশুর জন্য ক্ষতিকর। প্যাসিভ এক্সপোজার, যেমন অ্যালকোহলযুক্ত পরিবেশে থাকা, শিশুর জন্য ঝুঁকি বাড়ায়। তাই গর্ভাবস্থায় সুস্থ জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত চেকআপ এবং ক্ষতিকর পদার্থ থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত জরুরি। মায়ের সচেতনতাই শিশুর সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।