১২ দিনে ৬ মৃত্যু, ১৭ জনের উপর হামলা: রাতে আসে, কামড়ায় আর উধাও হয়ে যায়… কে এই ‘মৃত্যু-সওদাগর’?

১২ দিনে ৬ মৃত্যু, ১৭ জনের উপর হামলা: রাতে আসে, কামড়ায় আর উধাও হয়ে যায়… কে এই ‘মৃত্যু-সওদাগর’?

মধ্যপ্রদেশের বড়ওয়ানি জেলার লিম্বাই এবং এর আশেপাশে গ্রামগুলিতে একটি রহস্যময় প্রাণী যেন মৃত্যুর ছায়া ফেলে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এই অচেনা প্রাণীটি ১৭ জনকে আহত করেছে, যার মধ্যে ৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই রহস্য প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

প্রথম ঘটনা থেকে আতঙ্ক ছড়ায়, ১১ দিনে ৬ জনের মৃত্যু

সবচেয়ে প্রথম ঘটনাটি ৫ মে লিম্বাই গ্রামে ঘটেছিল, যখন একটি প্রাণী রাতে ১৭ জন গ্রামবাসীকে আক্রমণ করে। প্রাথমিকভাবে মানুষ আহত হয়েছিল, কিন্তু ২৩ মে থেকে মৃত্যুর सिलसिला শুরু হয়। ২৩ মে তিন জন, ২৭ মে একজন, এবং ১ ও ২ জুন আরও দুজন মারা যান।

আহতরা বাড়িতে চিকিৎসাধীন, হাসপাতালে ভর্তি আরও ২ জন আক্রান্ত

চিকিৎসকদের মতে, প্রাণীটির কামড়ানোর পর গুরুতর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. দিভিয়ানী আহরওয়াল জানিয়েছেন যে, ১৭ জনের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, বাকি ১১ জনের চিকিৎসা তাদের বাড়িতেই চলছে। অন্যদিকে, সম্প্রতি বারলা গ্রামেও একই ধরনের দুটি ঘটনা ঘটেছে, যাদের ইন্দোরে রেফার করা হয়েছে।

বন বিভাগের অনুসন্ধান ব্যর্থ, এখনও কোনো সূত্র নেই

বড়ওয়ানির ডিএফও আশিস বানসোডের মতে, হামলার পর এলাকায় তল্লাশি চালানো হলেও কোনো পায়ের ছাপ, প্রাণীর মৃতদেহ বা অন্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গ্রামবাসীদের মতে, আক্রমণকারী প্রাণীটি কুকুরের মতো দেখতে ছিল, কিন্তু এর স্পষ্ট পরিচয় জানা যায়নি।

প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে

প্রশাসন নিহতদের পরিবারকে ৮ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। একই সাথে, আহতদের চিকিৎসা ছাড়াও প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে যে, প্রতিটি আক্রান্তের উপর নজর রাখা হচ্ছে।

চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় বাধা: হামলাকারীর পরিচয় নেই

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে যে, রোগের সঠিক পরিচয় না পাওয়ায় উপযুক্ত চিকিৎসা কঠিন হচ্ছে। নিহতদের মস্তিষ্কের টিস্যু এবং আহতদের লালা পরীক্ষার জন্য পুনের ল্যাবে পাঠানো হয়েছে, যাতে প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করা যায়|

গ্রামগুলিতে আতঙ্ক, মানুষ যজ্ঞ করছে

রহস্যময় আক্রমণে ভীত গ্রামবাসীরা এখন পূজা-পাঠের আশ্রয় নিচ্ছেন। লিম্বাই গ্রামে প্রতিটি পরিবার থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলে যজ্ঞ করা হয়েছে, যাতে গ্রামের উপর নেমে আসা এই অজ্ঞাত বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

খনও প্রশ্ন রয়ে গেছে: এটি কি কোনো প্রাণী নাকি কোনো অজ্ঞাত রোগ?

১২ দিনে ৬টি মৃত্যু, ১৭ জনের উপর হামলা এবং হামলাকারীর কোনো সূত্র নেই… এই ঘটনা এখন একটি রহস্যময় ধাঁধায় পরিণত হয়েছে। এটি কি কোনো সংক্রামিত প্রাণী, নাকি কোনো বিপজ্জনক ভাইরাসের বিস্তার? প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সামনে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *