শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্যে সংকট… আগামী দশকে ব্রিটেনের মূল বাসিন্দারা হবেন সংখ্যালঘু, মুসলিম জনসংখ্যা ২০% ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে!

একদা ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে পরিচিত গ্রেট ব্রিটেন এখন নিজেই নিজের পরিচয় হারানোর দ্বারপ্রান্তে। সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলিতে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা ব্রিটেনের সামাজিক কাঠামো, সংস্কৃতি এবং রাজনীতিতে সম্পূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আগামী কয়েক দশকে মুসলিম জনসংখ্যায় ব্যাপক উল্লম্ফন ঘটবে এবং মূল ব্রিটিশ (শ্বেতাঙ্গ) জনগণ তাদের নিজেদের দেশেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন।
বর্তমানে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত মানুষ দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৩%। কিন্তু এই সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে মাত্র ৫৭%-এ নেমে আসবে। অন্যদিকে, ২০৬৩ সাল নাগাদ ব্রিটেনের শ্বেতাঙ্গরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে এবং অশ্বেতাঙ্গ ও মুসলিম জনসংখ্যা দেশের নতুন সামাজিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে। লন্ডন এবং বাকিংহামের মতো প্রধান শহরগুলিতে এই পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে—এখানে শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যা ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে।
ব্রিটেনে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন হবে মুসলিম
প্রতিবেদন বলছে যে, ইসলাম ব্রিটেনে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় পরিচয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মুসলিম জনসংখ্যা ৭%, যা আগামী ২৫ বছরে ১২% হবে। এবং এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ দেশের মোট জনসংখ্যার ২০% মুসলিম হবে। অর্থাৎ, প্রতি পাঁচজন ব্রিটিশ নাগরিকের মধ্যে একজন হবেন মুসলমান। ২০০১ সালে যেখানে ব্রিটেনে মুসলিমদের সংখ্যা মাত্র ১৬ লাখ ছিল, সেখানে ২০২১ সালের জনগণনা অনুযায়ী এই সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
ব্রিটেনের রাজনীতিতেও প্রভাব পড়বে, সাংস্কৃতিক পরিচয় বিলুপ্ত হবে
কেন্ট ইউনিভার্সিটির অনারারি প্রফেসর ম্যাট গুডউইনের মতে, জনসংখ্যার পরিবর্তনের এই ধারা ব্রিটেনের রাজনীতি, নীতি এবং পরিচয়—সবকিছুতে গভীর প্রভাব ফেলবে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে ব্রিটেন তার সাংস্কৃতিক শিকড় এবং মৌলিক ঐতিহ্যকে সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলবে।”
শিশুদের মধ্যেও প্রভাব দেখা যাচ্ছে, শ্বেতাঙ্গ বাবা-মায়ের সন্তানরা হবে ‘সংখ্যালঘু’
বাকিংহাম ইউনিভার্সিটির গবেষণায় একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে যে, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ এক-তৃতীয়াংশেরও কম শিশু এমন হবে যাদের বাবা-মা উভয়ই ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। বাকি শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বাবা বা মায়ের মধ্যে অন্তত একজন বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন।
অভিবাসীরা হয়ে উঠছে ব্রিটেনের নতুন মালিক
২০২৩ সালে রেকর্ড ৯ লাখেরও বেশি অভিবাসী ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে, যার মধ্যে বড় সংখ্যক ছিল অবৈধ অভিবাসী। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্মহার ২.৩৫, যা শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের জন্মহার ১.৩৯-এর চেয়ে অনেক বেশি। এই কারণেই অনুমান করা হচ্ছে যে ২০৭৬ থেকে ২০৭৯ সালের মধ্যে ব্রিটেনের মূল শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যা ‘সংখ্যালঘু’ শ্রেণীতে চলে আসবে।