চিৎকারে কাঁপছে সিভিল হাসপাতাল! মা বললেন— ‘ছেলে লাফিয়েছিল’, পড়ুন প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ

চিৎকারে কাঁপছে সিভিল হাসপাতাল! মা বললেন— ‘ছেলে লাফিয়েছিল’, পড়ুন প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ

গুজরাটের আহমেদাবাদে ২০২৫ সালের ১২ জুন, বৃহস্পতিবার, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI171 (বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, রেজিস্ট্রেশন VT-ANB) দুর্ঘটনায় পড়ে। ফ্লাইটটি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাচ্ছিল।

দুর্ঘটনাটি ফ্লাইট টেক-অফের ২ মিনিট পর বিমানবন্দরের কাছে মেঘানি নগরের একটি আবাসিক এলাকায় ঘটে।

বিমানটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ১ জন কানাডীয় এবং ৭ জন পর্তুগিজ নাগরিক অন্তর্ভুক্ত। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই এনডিআরএফ (NDRF) এর দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে চিৎকার ও উদ্বিগ্ন আত্মীয়দের ভিড় পরিবেশকে আরও বেদনাদায়ক করে তোলে। এই দুর্ঘটনা সম্পর্কে এক মহিলা জানিয়েছেন যে, তার ছেলে লাফিয়ে নিজের জীবন বাঁচিয়েছে। আসুন, প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিজ্ঞতা জেনে নিই…

আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে ভর্তি পুনম প্যাটেল সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন যে, তার ভাবী লন্ডনগামী ফ্লাইটে ছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি খবর পান যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি দ্রুত এখানে পৌঁছান। অন্যদিকে, রমিলা নামে এক মহিলা জানান যে, তার ছেলে ডাক্তারদের হোস্টেলে দুপুরের খাবারের বিরতির জন্য গিয়েছিল, তখনই বিমানটি সেখানে আছড়ে পড়ে। সে দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে, তার আঘাত লাগলেও সে নিরাপদে আছে।

‘অনেক ডাক্তারকে তাদের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে’

স্থানীয় নেতা দর্শনা বাঘেলা বলেন, “যখন বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, আমি আমার অফিসে ছিলাম। একটি বিকট শব্দ হয়েছিল। বিমানটি ডাক্তারদের আবাসিক ভবনে আঘাত হানে, যার ফলে অনেক ফ্ল্যাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা অনেক ডাক্তারকে তাদের ফ্ল্যাট থেকে নিরাপদে উদ্ধার করেছি।”

দুর্ঘটনা সম্পর্কে আমরা কী জানি?

ডিজিসিএ (DGCA) অনুসারে, বিমানটি দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে আইএসটি (IST) রানওয়ে ২৩ থেকে উড্ডয়ন করে। টেক-অফের পর বিমানটি এটিসি (ATC)-কে ‘মে-ডে’ কল করে, কিন্তু এর পরে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। ফ্লাইটর্যাডার২৪ (Flightradar24) এর তথ্য অনুযায়ী:

  • ১টা ৩০ মিনিটে (IST): বিমান মাটিতে ছিল, গতি ০ নটস।
  • ১টা ৩৪ মিনিটে (IST): গতি ১০ নটস।
  • ১টা ৩৮ মিনিটে (IST): বিমান ৬২৫ ফুট উচ্চতা এবং ১৭৪ নটস গতিতে পৌঁছায়, তারপর সংকেত হারিয়ে যায়।

বিমানটি বিমানবন্দরের সীমানার বাইরে একটি আবাসিক এলাকায় পড়ে, যার পর আগুন ধরে যায় এবং ঘন কালো ধোঁয়া বের হয়।

উদ্ধার অভিযানে ৯০ জন কর্মী নিয়ে তিনটি দল নিযুক্ত

  • এনডিআরএফ: গান্ধীনগর থেকে ৯০ জন কর্মী নিয়ে তিনটি দল এবং ভাদোদরা থেকে তিনটি অতিরিক্ত দল উদ্ধারের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
  • দমকল বিভাগ: দমকলের গাড়ি আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত।
  • স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক: আশেপাশের মানুষ উদ্ধার কাজে সাহায্য করছেন।

বোয়িং ৭৮৭ এর প্রথম বড় দুর্ঘটনা

এটিই প্রথমবার যে বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। ১৪ বছর আগে চালু হওয়া এই মডেলটি সম্প্রতি ১ বিলিয়ন যাত্রী পরিবহনের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। বোয়িংয়ের জন্য এই দুর্ঘটনা একটি বড় ধাক্কা, বিশেষ করে যখন কো ম্পা নিটি তার ৭৩৭ প্রোগ্রামের সমস্যাগুলির সঙ্গে जूझছে। সিইও কেলি অর্টবার্গের (Kellie Ortberg) জন্য এটি আরও একটি চ্যালেঞ্জ হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *