জরায়ুর অস্ত্রোপচারের জন্য পেট খুলতেই চিকিৎসকদের চক্ষু চড়কগাছ! সঙ্গে সঙ্গে ডাকা হলো পুলিশ!

নানগি দেবীর শুধুমাত্র পেটে ব্যথা ছিল, কিন্তু হাসপাতালের গাফিলতি তার জীবনকে সাত মাসের যন্ত্রণায় বদলে দিয়েছে। নভেম্বরে যখন তিনি জয়শ্রী নামের এক মহিলা চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করান, তখন সামান্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়।
কিন্তু ব্যথা বাড়তেই থাকে।
চিকিৎসক জয়শ্রী মেমোরিয়াল হাসপাতালে একটি ছোট অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু এরপর যা ঘটল, তা ছিল চমকপ্রদ। অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকদের গাফিলতিতে নানগি দেবীর পেটের ভেতরে একটি ব্যান্ডেজের টুকরো রয়ে যায় – এবং তিন দিন পর সুস্থ না হয়েই তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
সাত মাস ধরে ভেতরে ছিল ব্যান্ডেজের টুকরো!
সাত মাস ধরে নানগি দেবী অসহ্য ব্যথা সহ্য করতে থাকেন। তার স্বামী সুওয়ালাল তাকে বারবার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান, কিন্তু প্রতিবারই শুধু ব্যথানাশক ওষুধ ধরিয়ে দেওয়া হয়।
শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে তিনি বাগুরুর একটি অন্য হাসপাতালে দেখান। পরীক্ষায় যখন কিছু ধরা পড়ল না, তখন চিকিৎসকরা আবার অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন – এবং এবার অস্ত্রোপচারের পুরো ভিডিওগ্রাফি করানো হয়।
অস্ত্রোপচারের সময় রহস্য উন্মোচিত হলো – স্বামীর সামনেই বের হলো ৮ মিমি-র ব্যান্ডেজের টুকরো
অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকরা নানগি দেবীর স্বামীকেও ডেকে নেন এবং অপারেশনের সময় তার সামনে ৮ মিমি-র একটি ব্যান্ডেজের টুকরো পেট থেকে বের করা হয়।
এই টুকরোটি পরীক্ষার জন্য দুর্লভজি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সুওয়ালালের বক্তব্য, এই ব্যান্ডেজটি তার স্ত্রীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির অনেক ক্ষতি করেছে। তিনি আজও পুরোপুরি সুস্থ নন এবং বারবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে।
চিকিৎসকের কাছে জানতে গেলে তাড়িয়ে দেওয়া হলো – শেষ পর্যন্ত থানায় যেতে হলো
ভুক্তভোগী পরিবার যখন চিকিৎসক জয়শ্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিল, তখন তিনি কথা পর্যন্ত বলেননি এবং তাড়িয়ে দেন। এরপর পরিবার মুহানা থানায় পৌঁছায় এবং অভিযোগ দায়ের করে।
পুলিশ প্রতারণা, জীবন নিয়ে খেলা, গাফিলতি এবং জালিয়াতি-র মতো গুরুতর ধারায় চিকিৎসক জয়শ্রী সহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
এই ঘটনা থেকে কী শেখা যেতে পারে?
- প্রতিটি অস্ত্রোপচারের পর রোগীর পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
- যেকোনো লক্ষণকে বারবার উপেক্ষা করা প্রাণঘাতী হতে পারে।
- যদি চিকিৎসক গুরুত্ব না দেন, তবে দ্বিতীয় চিকিৎসা মতামত অবশ্যই নিন।