পালি-তে শীতলা মায়ের অলৌকিক ঘটনা, বিজ্ঞানও নতজানু, লক্ষ লক্ষ লিটার জল শুষে নেয় মন্দিরে তৈরি এই জল সংরক্ষণের গর্ত!

পালি-তে শীতলা মায়ের অলৌকিক ঘটনা, বিজ্ঞানও নতজানু, লক্ষ লক্ষ লিটার জল শুষে নেয় মন্দিরে তৈরি এই  জল সংরক্ষণের গর্ত!

আপনি গল্পে পড়েছেন বা শুনেছেন যে, এমন একটি পাত্র আছে যা যতই পূর্ণ করা হোক না কেন, কখনও ভরে না। কিন্তু রাজস্থানের পালি জেলায় অবস্থিত শীতলা মাতা মন্দিরে এটি কোনো কল্পনা নয়, বরং ৮০০ বছর ধরে চলে আসা এক বাস্তবতা।

ভাঠুণ্ড গ্রামের এই মন্দিরটি কেবল শ্রদ্ধার কেন্দ্রই নয়, বিজ্ঞানের কাছে এক রহস্যময় চ্যালেঞ্জও বটে।

অলৌকিক পাত্রের গল্প

শীতলা মাতা মন্দিরের উঠোনে অবস্থিত একটি ছোট পাত্র, যা মাত্র আধা ফুট চওড়া এবং ততটাই গভীর, শত শত বছর ধরে লক্ষ লক্ষ লিটার জল পান করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এক ফোঁটাও উপচে পড়েনি। স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই পাত্রে এখন পর্যন্ত ৫০ লক্ষ লিটারেরও বেশি জল ঢালা হয়েছে, তবুও এটি খালিই থাকে।

বছরে দু’বার খোলে রহস্য

এই রহস্যময় পাত্রটি বছরে মাত্র দুটি উপলক্ষে ভক্তদের দর্শনের জন্য খোলা হয়:

  • শীতলা সপ্তমী
  • জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা

এই দিনগুলিতে গ্রামের মহিলারা কলস ভরে হাজার হাজার লিটার জল পাত্রে ঢালেন, কিন্তু পাত্রটি কখনও ভরে না। পরিশেষে, যখন পুরোহিত মায়ের চরণে পাত্রটি স্পর্শ করান এবং দুধের ভোগ নিবেদন করেন, তখনই তা পূর্ণ হয়ে যায় – এই ঘটনা ভক্তদের বিশ্বাসকে আরও গভীর করে তোলে।

কে পান করে জল?

বিশ্বাস করা হয় যে, প্রায় ৮০০ বছর আগে এই স্থানে বাবরা নামক এক রাক্ষস বাস করত, যে বিবাহ অনুষ্ঠানে বরদের হত্যা করত। যখন মানুষ শীতলা মায়ের কাছে রক্ষার প্রার্থনা করল, তখন দেবী এক কন্যারূপে আবির্ভূত হলেন এবং তার হাঁটু দিয়ে রাক্ষসের বিনাশ করলেন। মরার সময় রাক্ষস বর চাইল যে, গ্রীষ্মকালে তার তৃষ্ণা নিবারণের জন্য ভক্তদের হাত দিয়ে জল পান করানো হোক। মা এই বর স্বীকার করলেন এবং তখন থেকেই এই প্রথা চলে আসছে।

বিজ্ঞানও বিস্মিত

অনেক বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী এই রহস্য সমাধানের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত জানা যায়নি যে জল কোথায় যায়। কোনো সুরঙ্গ? কোনো নালা? কোনো জল-সঞ্চালন ব্যবস্থা? কেউ কিছু জানে না।

শ্রদ্ধা না বিজ্ঞান বহির্ভূত বিশ্বাস

এই মন্দির এবং পাত্রটি কেবল রাজস্থানের সাংস্কৃতিক পরিচয় নয়, বরং ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের এক অলৌকিক উদাহরণও বটে। এখানে কেবল জল নয়, শ্রদ্ধা নিহিত থাকে। মানুষ দূর দূর থেকে এই বিস্ময় দেখতে আসে, তাদের জীবনের সমস্যার সমাধানের কামনা করে এবং বিশ্বাস নিয়ে ফিরে যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *