১,২০০ কোটি শুধু রাম মন্দিরে! তাহলে বাকি টাকা কোথায়? ট্রাস্ট নির্ভয়ে প্রকাশ করল সব গোপন তথ্য

রাম মন্দিরকে (Ram Mandir) দিব্য করে তোলার জন্য এ পর্যন্ত মোট ১,৬২১ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এর মধ্যে মন্দির নির্মাণ কাজ, চত্বর উন্নয়ন, তীর্থযাত্রীদের (pilgrims) সুবিধা এবং অন্যান্য নির্মাণ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সম্প্রতি ৭ জুন মণিরাম দাস ছাউনিতে (Maniram Das Chhawani) শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্টের (Shri Ram Janmabhoomi Teerth Kshetra Trust) একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত বিবরণ পেশ করা হয়। এই আর্থিক বছর ২০২৪-২৫ এই মন্দির নির্মাণ ও অন্যান্য প্রকল্পে ৬৫২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ সালে ৬৫২ কোটি টাকা খরচ, এপ্রিল ২০২৬ পর্যন্ত সমস্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে
রাম মন্দির চত্বরে চলমান নির্মাণ কাজ ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রাস্ট কর্তৃক মন্দির নির্মাণের পাশাপাশি জাদুঘর (museum), বিশ্রামাগার (rest area), ট্রাস্ট কার্যালয় ভবন (trust office building) এবং সরযূ (Sarayu) নদীর তীরে অবস্থিত রামকথা জাদুঘরেরও (Ramkatha Museum) দ্রুত গতিতে উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও, সমস্ত নির্মাণ কাজের সময়বদ্ধতা বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমিক পরিকল্পনা (phasewise plan) তৈরি করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি নির্মাণের গুণগত মান এবং জাঁকজমককে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
মন্দিরের প্রধান কাঠামো প্রস্তুত, ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে
রাম জন্মভূমি চত্বরে শ্রীরাম মন্দিরের প্রধান কাঠামো সম্পূর্ণরূপে তৈরি হয়ে গেছে। মন্দিরের স্থাপত্য শিল্প (architectural art) এবং পাথরের খোদাই এটিকে অত্যন্ত भव्य করে তুলেছে। তীর্থযাত্রী সুবিধা কেন্দ্র, সপ্ত মণ্ডপম (Sapt Mandapam) এবং পুষ্করিণী (পবিত্র কুন্ড – holy pond) এর নির্মাণ কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এখন এই সমস্ত স্থানে চূড়ান্ত ফিনিশিং এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে, যাতে ভক্তরা বিশ্বমানের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন।
পরকোটা এবং শেষাবতার মন্দিরের ২০% নির্মাণ বাকি
রাম মন্দিরকে নিরাপত্তা এবং বাস্তুশাস্ত্র (Vastu Shastra) অনুযায়ী চারদিক থেকে একটি বিশাল আয়তাকার পরকোটা (প্রাচীর) দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। এই পরকোটার ৮০% নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে, যখন ২০% কাজ এখনও বাকি আছে। একইভাবে মন্দির চত্বরে নির্মিত শেষাবতার মন্দিরেরও প্রায় ৮০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই দুটি নির্মাণ পুরো প্রকল্পের জাঁকজমক এবং ধর্মীয় গুরুত্বকে আরও শক্তিশালী করে।
দক্ষিণ দিকে দ্বার নির্মাণ ও অন্যান্য সুবিধা নির্মাণাধীন
মন্দির চত্বরের দক্ষিণ দিকে একটি প্রধান প্রবেশদ্বার (main entrance gate) নির্মাণ কাজ চলছে, যা ভক্তদের জন্য আরও একটি পথ খুলে দেবে। এর পরে গেট নম্বর-৩ তেও একটি নতুন বিশাল দ্বার নির্মিত হবে। দক্ষিণ দিকেই জাদুঘর, ভক্তদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার, এবং ট্রাস্টের নতুন কার্যালয় ভবনও নির্মাণাধীন। এই সমস্ত সুবিধা মন্দির চত্বরকে একটি সামগ্রিক তীর্থস্থান হিসেবে গড়ে তুলবে।
মোট খরচ ২০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার অনুমান
রাম মন্দির ট্রাস্ট জানিয়েছে যে, সমস্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত মোট খরচ দুই হাজার কোটি টাকার বেশি হতে পারে। এর মধ্যে প্রধান মন্দির নির্মাণ, পরকোটা, জাদুঘর, যাত্রী সুবিধা কেন্দ্র, রাস্তা, বিদ্যুৎ, জল, নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল সুবিধা সহ সম্পূর্ণ চত্বরের সৌন্দর্যবর্ধনের খরচ অন্তর্ভুক্ত। এই পরিকল্পনা পুরো দেশ এবং বিশ্বের ভক্তদের জন্য একটি বিশাল এবং সর্বসুবিধাযুক্ত কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে।
জমি ক্রয় বাবদও বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয়
শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট ২০২৫ সালের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে অযোধ্যায় মোট ১০,৪৩৩ বর্গফুট জমি ক্রয় করেছে। এই জমির জন্য ১ কোটি ৫৫ লক্ষ ৪০ হাজার ৮০০ টাকা খরচ করা হয়েছে। বাগ বিজেশী (Bag Bijesi) এলাকায় ৩,০৬০ বর্গফুট জমি ৪৭ লক্ষ ২০ হাজার ৮০০ টাকায় এবং সেখানেই বিশ্ব মোহিনী (Vishwa Mohini) থেকে ৬,৬৯১ বর্গফুট জমি ৯৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮০০ টাকায় কেনা হয়েছে। এছাড়াও কোট রামচন্দ্র (Kot Ramchandra) এলাকায় ৬৮.৭৪ বর্গফুট ভূমি ১০ লক্ষ টাকায় কেনা হয়েছে। এই জমি ভবিষ্যতের উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় নেওয়া হয়েছে।