আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা, উড্ডয়নের এক মিনিটের মধ্যেই ৬৫০ ফুট থেকে বিমান বিধ্বস্ত, তদন্ত কমিটি গঠিত

গত ১২ জুন আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে শনিবার বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-171 আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর মাত্র ৬৫০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিল, এরপরই বিমানটি দ্রুত উচ্চতা হারাতে শুরু করে এবং মেঘানীনগর মেডিকেল হোস্টেল ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল সচিব সমীর কুমার সিনহা জানান, বিমানটি উড্ডয়নের পর মাত্র ৬৫০ ফুট উচ্চতা অর্জন করেছিল। এর পরপরই বিমানটি দ্রুত উচ্চতা হারাতে থাকে এবং দুপুর ১:৩৯ মিনিটে পাইলট এটিসিকে (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল) ‘মে ডে’ কল পাঠান। এক মিনিটের মধ্যেই বিমানটি মেঘানীনগরের মেডিকেল হোস্টেল প্রাঙ্গণে বিধ্বস্ত হয়। সমীর সিনহা এও জানান যে, দুর্ঘটনার আগে বিমানটি প্যারিস-দিল্লি-আহমেদাবাদ রুটে কোনো রকম প্রযুক্তিগত সমস্যা ছাড়াই যাত্রা সম্পন্ন করেছিল। বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে, তিনিও সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবাকে হারিয়েছেন, তাই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির দুঃখ তিনি বুঝতে পারেন। এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য কেন্দ্র সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে, যা তিন মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দেবে। স্বরাষ্ট্র সচিবের সভাপতিত্বে গঠিত এই কমিটিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের উপরের কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। কমিটি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করবে, বর্তমান এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) এবং নির্দেশিকা পর্যালোচনা করবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা মোকাবেলার জন্য ব্যাপক সুপারিশ দেবে। ডিজিএনসিএ-এর নির্দেশ অনুযায়ী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানগুলির তদন্ত চলছে। ভারতে মোট ৩৪টি ড্রিমলাইনার রয়েছে, যার মধ্যে ৮টির তদন্ত ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত বিমানে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যার মধ্যে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং মাত্র একজন ব্যক্তি জীবিত ফিরে আসতে পেরেছেন। বিমানটি যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেই মেডিকেল হোস্টেল প্রাঙ্গণেও ২০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।