২০-৩০ হাজার টাকার চাকরির চেয়ে এই ৪টি নিজের কাজ ভালো, আয় প্রচুর… ৬ মাসেই ভুলে যাবেন চাকরির নাম!

আপনি যদি চাকরি (Job) করে বিরক্ত হয়ে যান, অথবা ছোট ব্যবসা দিয়েই ক্যারিয়ার শুরু করতে চান, তাহলে আজকের দিনে অসংখ্য সুযোগ রয়েছে। এমন অনেক ছোট ব্যবসা আছে, যা আপনি খুব কম খরচে শুরু করতে পারেন এবং ভালো আয় করতে পারেন।
আজ আমরা আপনাকে চারটি ছোট ব্যবসার ধারণা সম্পর্কে বিস্তারিত বলব। যা আপনি মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসাগুলো ভারতের স্থানীয় বাজার এবং বর্তমান প্রবণতা মাথায় রেখে নির্বাচন করা হয়েছে।
১. চা/জলখাবার স্টল বা ক্লাউড কিচেন
ভারতে চা এবং ফাস্ট ফুডের চাহিদা সবসময়ই থাকে, বিশেষ করে অফিস, কলেজ বা ভিড়পূর্ণ বাজারে। এই ব্যবসাটি আপনি মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। যদি আপনি ভালো রান্না করতে পারেন, তাহলে সেটির চাহিদা সর্বত্র থাকে। এর জন্য আপনি ফুটপাথ বা আপনার বাড়ির রান্নাঘর থেকে শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা কম খরচে শুরু করা যেতে পারে এবং অনলাইন ডেলিভারির মাধ্যমে এর পরিধি বাড়ানো যেতে পারে।
শহরগুলিতে কর্মরত মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা বাড়ির তৈরি খাবার পছন্দ করে। ঘরে তৈরি টিফিন সার্ভিসের চাহিদা অফিস, হোস্টেল এবং পিজি-তে সবসময়ই থাকে। অবস্থান এবং মেনু অনুযায়ী প্রতি টিফিনের দাম ৫০-১৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যদি আপনি প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০টি টিফিনও সরবরাহ করেন, তাহলে প্রতি টিফিনের দাম ১০০ টাকা ধরে (১০০ x ৫০ x ২৫ দিন = ১,২৫,০০০ টাকা/মাস) মাসিক বিক্রয় সম্ভব। যদি ৩০% খরচ ধরে নেওয়া হয়, তাহলে প্রতি মাসে প্রায় ৩৭ হাজার টাকা খরচ হবে এবং মাসিক আয় প্রায় ৮৮,০০০ টাকা হবে। শুরুতে আপনি নিজে ডেলিভারি দিতে পারেন, পরে স্থানীয় ডেলিভারি বয় নিয়োগ করতে পারেন।
যখন এই কাজটি বড় হবে, তখন এটিকে ক্যাটারিং সার্ভিসে সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। এর ফলে বিয়ে এবং পার্টির বুকিং পাওয়া যাবে এবং আয়ও বাড়তে থাকবে।
২. সিজনাল ব্যবসা থেকে প্রচুর আয়
সিজনাল ব্যবসায় (Seasonal Business) বিনিয়োগ কিছুটা বেশি করতে হতে পারে। তবে আয়ও প্রচুর হয়। এর জন্য আপনাকে শুধু ভারতের উৎসবের মরসুমকে লক্ষ্য করতে হবে, যেমন রাখিবন্ধনে রাখির ব্যবসা, দিওয়ালিতে আলো এবং সাজসজ্জার জিনিসপত্র, হোলিতে রং এবং পিচকারি। এছাড়াও দেশে আরও অনেক উৎসব রয়েছে, যেখানে আপনি উৎসব-সম্পর্কিত জিনিসপত্র বিক্রি করে প্রচুর আয় করতে পারেন। প্রথমে আপনি নিজের বাড়ি থেকে জিনিসপত্র বিক্রি শুরু করতে পারেন। যখন প্রতিবেশী এবং পরিচিতরা আপনার কাজ সম্পর্কে জানতে পারবে, তখন বাড়ি থেকেই জিনিসপত্র বিক্রি হতে শুরু করবে।
এছাড়াও স্থানীয় বাজারকে লক্ষ্য করতে পারেন। ছোট শহর এবং কসবাগুলিতে সাপ্তাহিক বাজার বসে, যেখানে আপনি উৎসব-সম্পর্কিত জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মকেও লক্ষ্য করতে পারেন। সিজনাল ব্যবসার জন্য আপনাকে উৎসব আসার আগেই পাইকারি দামে জিনিসপত্র কিনতে হবে এবং উৎসবের সময় বেশি দামে বিক্রি করতে হবে।
৩. হস্তনির্মিত পণ্য বিক্রি (গহনা, সাবান, মোমবাতি)
হস্তনির্মিত পণ্যের চাহিদা অনলাইন এবং অফলাইন বাজারে বাড়ছে। কারণ মানুষ অনন্য এবং পরিবেশ-বান্ধব জিনিস পছন্দ করে। এই ব্যবসাও ২০ হাজার টাকায় শুরু করা যেতে পারে, প্রতিটি স্থানীয় বাজারে কাঁচামাল পাওয়া যাবে। পণ্যের প্যাকেজিংয়ের উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় বাজার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি চাইলে বাড়িতে মোমবাতি তৈরির কাজ শুরু করতে পারেন, যা প্রায় ২০ হাজার টাকায় শুরু করা যাবে। বিক্রির জন্য আপনি স্থানীয় দোকানদারদের লক্ষ্য করতে পারেন। পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি করতে পারেন, রঙিন মোমবাতি প্রচুর বিক্রি হয়।
৪. স্টেশনারি এবং মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ
স্কুল-কলেজ এবং যেকোনো অফিসের বাইরে যদি আপনি শুধু স্টেশনারি এবং মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ নিয়ে দাঁড়ান, তাহলে প্রচুর ক্রেতা পেয়ে যাবেন। কারণ শিশুদের মধ্যে স্টেশনারি এবং তরুণদের মধ্যে মোবাইল অ্যাক্সেসরিজের চাহিদা সবসময় থাকে। যদি আপনি নতুন আইটেম নিয়ে আসেন, তাহলে দ্রুত বিক্রি হয়ে যাবে। শুরুতে আপনি কলম, পেন্সিল, রঙ, ডায়েরি, খাতা এবং স্টিকারের মতো জিনিস রাখতে পারেন। এছাড়াও, সস্তায় মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ পাইকারি দরে কিনে খুচরা বিক্রি করতে পারেন। আপনি মাত্র ১০ থেকে ২০ হাজার টাকায় এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পাইকারি দরে পণ্য কিনে খুচরা বিক্রি করলে মার্জিন ৪-৫ গুণ হতে পারে।