কোন রোগে সবচেয়ে বেশি ব্যথা হয়? মানুষ নিজের মৃত্যু চাইতে শুরু করে
অনেক সময় শরীরে এমন রোগ বাসা বাঁধে যা সহ্য করা সহজ নয়। প্রায়শই এই অসহনীয় অবস্থার কথা ভাবতে গেলে ক্যান্সার (Cancer)-এর মতো বিপজ্জনক রোগের দিকে মনোযোগ যায়। কিন্তু দুটি রোগ এমন আছে, যার থেকে হওয়া ব্যথা মানুষ সহ্য করতে পারে না।
অবস্থা এমন হয়ে যায় যে, এই ব্যথা বহনকারী ব্যক্তিরা নিজেই ঈশ্বরের কাছে মৃত্যু চাইতে শুরু করেন। এই রোগগুলি হলো ক্লাস্টার হেডেক (Cluster Headache) এবং ট্রাইজে মিনাল নিউরালজিয়া (Trigeminal Neuralgia)। এই দুটি রোগের সময় রোগীদের যে ব্যথা হয় তা দেখে যে কারো আত্মা কেঁপে উঠতে পারে। এই রোগগুলির লক্ষণগুলি কীভাবে দেখা যায় এবং কীভাবে এগুলি থেকে বাঁচা যায়। আসুন জেনে নিই…
ক্লাস্টার হেডেক
মাথাব্যথা হওয়া একটি সাধারণ ব্যাপার। ক্লান্তি বা অতিরিক্ত কাজের সময় এই সমস্যা প্রায়শই অনুভূত হয়। কিন্তু ক্লাস্টার হেডেক এর থেকে আলাদা। এতে তীব্র জ্বালা এবং সূঁচ ফোটানোর মতো অসহনীয় ব্যথা হয়। এটি একবারে একটি চোখের আশেপাশে বা মুখের এক অংশে হতে পারে। প্রতিবার মাথাব্যথা ১৫ মিনিট থেকে তিন ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে। এটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রাইমারি হেডেক ডিসঅর্ডার (Primary Headache Disorder) বলা হয়। ব্যথার কারণে চোখে ফোলাভাব এবং নাক বন্ধ হওয়ার মতো অভিযোগ থাকে। প্রায়শই এই ব্যথা চোখের চারপাশে, কপালে এবং মুখে অনুভূত হয়। এই ব্যথায় রাতের ঘুম এবং দিনের শান্তি হারিয়ে যায়।
ক্লাস্টার হেডেক থেকে কীভাবে বাঁচবেন
গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন: যদি ক্লাস্টার হেডেক-এর সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকা এবং গরম পরিবেশযুক্ত জায়গায় যাওয়া এড়িয়ে চলুন।
ব্যায়াম: তীব্র ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলুন। এমনটা করলে শরীরে তাপ উৎপন্ন হয়, যার ফলে ক্লাস্টার হেডেক-এর আক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ঘুমের ধরণ: পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন এবং এর জন্য একটি রুটিন তৈরি করুন।
খাদ্য: প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন।
ধূমপান এবং অ্যালকোহল: এই দুটি খারাপ অভ্যাস ক্লাস্টার হেডেক-এর ঝুঁকি বাড়ায়। এগুলি থেকে দূরে থাকুন।
ট্রাইজে মিনাল নিউরালজিয়া কী?
এই রোগটি জানার আগে এটি বোঝা জরুরি যে ট্রাইজে মিনাল নার্ভ (Trigeminal Nerve) কী? এই নার্ভ মানুষের শরীরে মুখ এবং মস্তিষ্কের মধ্যে বার্তা বাহক হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ, মুখ থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত ব্যথা, কোনো স্পর্শ এবং তাপমাত্রা সম্পর্কিত সংবেদনশীলতা পাঠায়। যখন ট্রাইজে মিনাল নার্ভে চাপ পড়ে বা এটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে, তখন ট্রাইজে মিনাল নিউরালজিয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের কারণে অনেক বেশি ব্যথা হয়। ব্যথা এত অসহনীয় হয় যে দাঁত পরিষ্কার করতেও কষ্ট হয়। মুখের ত্বক এতটাই সংবেদনশীল হয়ে যায় যে স্পর্শ করলেই বৈদ্যুতিক শক লাগার মতো অনুভূতি হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাইজে মিনাল নিউরালজিয়া এক ধরণের ক্রনিক পেন ডিজিজ (Chronic Pain Disease)। এর কারণ এখনও জানা যায়নি। উল্লেখ্য, বলিউড অভিনেতা সালমান খান (Salman Khan)-ও এই বিপজ্জনক রোগে ভুগেছেন।