খুশিতে আটখানা পুতিন, ইরান-ইসরায়েল হামলায় রাশিয়ার বিনা চাওয়ায় পূর্ণ হলো মনোবাঞ্ছা

ইউক্রেনের (Ukraine) সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া রাশিয়া (Russia) হয়তো উপসাগরীয় দেশগুলোতে তার প্রভাব হারাচ্ছে, কিন্তু ইসরায়েলের (Israel) ইরানের (Iran) উপর হামলার কারণে তার বিনা চাওয়ায় মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়েছে।
তিন বছর ধরে টানা যুদ্ধ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত রাশিয়ার তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে বড় ধরনের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়া তেল এবং গ্যাসের বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদক। উপসাগরীয় দেশগুলোতে সংকট দেখা দিলে যখনই অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে, তখনই রাশিয়ার বাজার আনন্দে আত্মহারা হয়েছে।
অপরিশোধিত তেলের দাম পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ
ইসরায়েলের ইরানের উপর আক্রমণের পর অপরিশোধিত তেলের দাম পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, প্রতি ব্যারেল ৭৬.৭০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইরানের অপরিশোধিত তেল উৎপাদন দৈনিক ৩.৪ মিলিয়ন ব্যারেল থেকে ১.৫-২ মিলিয়ন ব্যারেলে নেমে আসায় দাম আরও বেড়েছে। ডব্লিউপিআই (WTI) এবং ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল (Brent Crude Oil) প্রায় পাঁচ শতাংশ বেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, যদি আমেরিকা এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে অপরিশোধিত তেলের দাম আরও বাড়বে এবং এর আঁচ এশীয় দেশগুলোতেও স্পষ্ট দেখা যাবে।
ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে থাকার কারণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও উপসাগরীয় দেশগুলোতে তার বিশ্বস্ত বন্ধুকে সাহায্য করতে পারছেন না। সিরিয়ার (Syria) বাশার আল-আসাদ (Bashar al-Assad) সরকার ইতিমধ্যেই চলে গেছে এবং তিনি নিজেই রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
রাশিয়ার আরেক ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্কও (Turkey) ইরানের উপর হামলার নিন্দা করা ছাড়া অন্য কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়ার অবস্থায় নেই। এমন পরিস্থিতিতে পুতিন তার কৌশলগত অংশীদার ইরানকে ক্রমাগত দুর্বল হতে দেখা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেন না। ইরাক (Iraq) এবং লিবিয়াতেও (Libya) এখন রাশিয়ার প্রভাব নেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইরান-ইসরায়েল সংকটে মধ্যস্থতার প্রস্তাব অবশ্যই দিয়েছেন, যেমনটি তিনি আগেও ইরানকে রাজি করাতে সফল হয়েছিলেন। রাশিয়া মনে করে যে, ইরান সংকট থেকে সে আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছাকাছি আসতে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার ভূমিকা বাড়াতে আবার সফল হবে।
ইরান রাশিয়াকে বড় আকারে শাহেদ এরিয়াল ড্রোন (Shahed Aerial Drone) সরবরাহ করে, যা ইউক্রেনে ক্রমাগত বোমা হামলায় সফল প্রমাণিত হচ্ছে। রাশিয়ায় যে ড্রোন কারখানাগুলো আছে, ইউক্রেন নিজেই সেগুলোকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর।