ইরানকে সমর্থন রাশিয়ার, আমেরিকাকে দূরে থাকার বার্তা… পরমাণু ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিল

ইরানকে সমর্থন রাশিয়ার, আমেরিকাকে দূরে থাকার বার্তা… পরমাণু ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিল

মস্কো: রাশিয়া (Russia) বুধবার আমেরিকাকে (America) কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তারা যেন ইরানের (Iran) উপর হামলা না করে, অন্যথায় এর ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে (Middle East) পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। রাশিয়া এও দাবি করেছে যে, ইসরায়েলের (Israel) হামলার কারণে বিশ্ব একটি বড় পরমাণু বিপর্যয়ের (Nuclear Catastrophe) খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।

এই বিবৃতি রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ (Sergei Ryabkov) সেন্ট পিটার্সবার্গে (Saint Petersburg) একটি অর্থনৈতিক সম্মেলনের সময় দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, মস্কো আমেরিকাকে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করার আবেদন জানাচ্ছে, কারণ এর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, “এই পদক্ষেপ পুরো এলাকাকে কাঁপিয়ে দেবে। আমরা আমেরিকাকে এই ধরনের জল্পনা এবং সামরিক হস্তক্ষেপের চিন্তা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।”

পরমাণু ধ্বংস থেকে মাত্র কয়েক মিলিমিটার দূরে
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা (Maria Zakharova) এও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলিতে (Nuclear Facilities) হামলা করেছে, যার কারণে বিশ্ব একটি ধ্বংসাত্মক পরমাণু দুর্ঘটনা থেকে ‘মিলিমিটার’ দূরত্বে রয়েছে। তিনি বলেছেন যে, ইরানের নিউক্লিয়ার সাইটগুলির ক্ষতি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (International Atomic Energy Agency – IAEA) ও এটি নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেছেন, “পুরো বিশ্ব কেন চুপ? পরিবেশবাদীদের (Environmentalists) আওয়াজ কেন উঠছে না? তারা কি মনে করে যে বিকিরণের (Radiation) ঢেউ তাদের থেকে দূরে থাকবে? ফুকুশিমা (Fukushima) মনে করুন।”

উল্লেখ্য যে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে, তারা ইরানের নিউক্লিয়ার ফ্যাসিলিটিজগুলিতে হামলা করেছে যাতে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র (Nuclear Weapons) তৈরি করা থেকে আটকানো যায়। কিন্তু ইরান সবসময়ই বলেছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে শান্তিপূর্ণ।

রাশিয়ার মধ্যস্থতার প্রস্তাব আমেরিকাকে প্রত্যাখ্যান করল
জানুয়ারি ২০২৫ সালে রাশিয়া এবং ইরান ২০ বছরের কৌশলগত অংশীদারিত্বে (Strategic Partnership) স্বাক্ষর করেছিল। যদিও রাশিয়ার উপর ইরানের সামরিক সহায়তা করার কোনো সরাসরি দায়িত্ব নেই। রাশিয়া এই উত্তেজনা কমানোর জন্য মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছিল, কিন্তু আমেরিকা এবং ইসরায়েল এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো অবস্থান নেয়নি। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা SVR এর প্রধান সের্গেই নারিশকিন (Sergei Naryshkin) বলেছেন যে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এখন অত্যন্ত সংবেদনশীল মোড়ে পৌঁছেছে।

আমেরিকাও কি হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে?
রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে (Donald Trump) রাশিয়ার মধ্যস্থতার প্রস্তাব সম্পর্কে জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি উত্তরে ইরানের কাছে “শর্তহীন আত্মসমর্পণ” (Unconditional Surrender) দাবি করেছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন যে, আমেরিকা এখন ইসরায়েলের সাথে মিলে ইরানের উপর হামলার বিকল্পও ভাবছে।

রাশিয়ার কৌশলগত সুবিধা হতে পারে
যদিও রাশিয়া এই সংঘাতের বিরোধিতা করছে, কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে এই যুদ্ধ থেকে রাশিয়ার কিছু কৌশলগত সুবিধা হতে পারে। ইরানি তেলের সরবরাহ ব্যাহত হলে রুশ তেলের চাহিদা বাড়তে পারে। তেলের দামে উত্থান রাশিয়ার রাজস্ব বাড়াতে পারে। আমেরিকার মনোযোগ ইউক্রেন (Ukraine) থেকে সরে পশ্চিম এশিয়ার দিকে যেতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *