স্টেশনে মাইক চালু ছিল, মহিলা বললেন এমন কথা যে যাত্রীরা হেসে উঠলেন!

রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের জন্য ট্রেন সংক্রান্ত ঘোষণা করা একটি সাধারণ বিষয়, কিন্তু লখনউয়ের চারবাগ রেলওয়ে স্টেশনে সম্প্রতি এমন একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে যা শুধু সেখানে উপস্থিত যাত্রীদেরই অবাক করেনি, বরং সোশ্যাল মিডিয়াতেও মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এই অস্বাভাবিক ঘটনার ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ এটি দেখে হাসাহাসি করছেন।
কী ঘটেছিল?
আসলে, চারবাগ রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর ৬-এ মোতায়েন থাকা একজন মহিলা রেলওয়ে কর্মী ট্রেনের তথ্য দিতে তার মাইক ব্যবহার করছিলেন। তিনি স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ঘোষণা শুরু করেন, “যাত্রীগণ দয়া করে মনোযোগ দিন…” কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি মাইক বন্ধ করতে ভুলে যান এবং তার ব্যক্তিগত কথাবার্তা মাইকের মাধ্যমে পুরো রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিধ্বনিত হয়। সেই মহিলা কর্মীর মাইক থেকে যে আওয়াজ আসে, তা সেখানে উপস্থিত যাত্রীদের অবাক করে দেয়। মাইকে স্পষ্ট শোনা যায় – “কতটা বেহায়া লোক… মহিলাকে দেখছে।” এই বাক্যটি প্ল্যাটফর্মে বসে থাকা যাত্রীদের কানে পৌঁছাতেই প্রথমে সবাই অবাক হয়ে যায়, কিন্তু তৎক্ষণাৎ হাসির ফোয়ারা ছুটে আসে। লোকেরা হাসতে হাসতে একে অপরের কাছে জিজ্ঞাসা করতে থাকে যে, আসলে কী হয়েছে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ভিডিও
এই ঘটনার ভিডিও দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। দেশজুড়ে মানুষ এটি দেখে হাসাহাসি করছে এবং মজার প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, প্ল্যাটফর্মে লাগানো বড় বড় লাউডস্পিকার থেকে মহিলার এই ব্যক্তিগত কথাবার্তা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, যা যাত্রীরা রেকর্ড করে নিয়েছে।
“দিনটা দারুণ হয়ে গেল ভাই… এমন চাপপূর্ণ রেলওয়ে যাত্রায়ও হাসি পেলাম,” একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন। অন্য একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “এবার থেকে মাইক চেক করতে ভুলব না, নইলে পরের বার আমার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাবে।”
টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই ভিডিওটি নিয়ে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। কিছু মানুষ এটিকে রেলওয়ে স্টাফের গাফিলতি বলে অভিহিত করেছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে দিনের পর দিন চাপমুক্ত মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন।
যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার সময় স্টেশনে উপস্থিত কিছু যাত্রী মিডিয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে জানান যে, প্রথমে তাদের মনে হয়েছিল হয়তো কোনো নতুন তথ্যের ঘোষণা হচ্ছে, কিন্তু যখন তারা মাইক থেকে ‘কতটা বেহায়া লোক’ এর মতো কথা শোনেন, তখন তারাও অবাক হয়ে যান। একজন যাত্রী জানান, “প্রথমে ভেবেছিলাম কোনো জরুরি খবর হবে, তারপর হাসি থামানো কঠিন হয়ে পড়ল। সবাই হাসছিল।”
কেউ কেউ এ নিয়ে ঠাট্টা করে বলেছেন যে, “রেলওয়ে স্টেশনে সব সময় টিকিট কাউন্টার বা দেরিতে আসা ট্রেনের চিন্তা থাকে, এবার মাইক বিনোদন দিল।”
রেলওয়ে প্রশাসনের নীরবতা
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই বিষয়ে রেলওয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। যদিও কিছু রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে যে, ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল এড়াতে কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হবে। রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন যে, সম্ভবত এই মামলায় মহিলা কর্মীকে সতর্ক করা হবে, কারণ এই ঘটনাটি স্টেশনের মর্যাদা এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা তথ্য ব্যবস্থার সাথে জড়িত।
মাইক চালু থাকার ঘটনা এখন সাধারণ
এই ধরনের ঘটনা শুধু রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। এর আগেও অনেক ভিডিও কল, অনলাইন ক্লাস এবং অফিসের মিটিংয়ে মানুষ মাইক বন্ধ করতে ভুলে যায় যার ফলে ব্যক্তিগত কথা জনসমক্ষে চলে আসে। গত বছর দিল্লির একটি স্কুলের অনলাইন ক্লাসে শিক্ষকের মাইক চালু ছিল এবং তার ব্যক্তিগত কথা পুরো ক্লাস শুনে ফেলেছিল। এছাড়াও, অনেক কর্পোরেট মিটিংয়েও এমন ঘটনা ঘটেছে।
জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি: হাসি-ঠাট্টা ও উদ্বেগ উভয়ই
যেখানে একদিকে মানুষ এই ঘটনাকে হালকা মজার বিষয় হিসেবে নিচ্ছে, সেখানে কিছু যাত্রী এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী রেলওয়ে স্টাফের পেশাদারী গাফিলতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, “রেলওয়ের মতো সংবেদনশীল জায়গায় কর্মীদের সতর্ক থাকা উচিত। এটি তো মজার ছলে এড়িয়ে যাওয়া গেল কিন্তু কাল কোনো গুরুতর তথ্য বাদ পড়তে পারে।” অন্যদিকে, কিছু মানুষ এটিকে মানবিক ভুল বলে মনে করছেন এবং কর্মীর প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন। “সবাই ভুল করে, এবার মাইক খোলা রয়ে গেছে তো কি হয়েছে। এমনিতেই রেলওয়ে যাত্রায় এত টেনশন থাকে, একটু হাসিও দরকার,” একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন।
কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে?
যদিও রেলওয়ের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনার পর কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ সেশন আয়োজন করা হয় যাতে ভবিষ্যতে এমন ভুল না হয়। রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে পাবলিক অ্যানাউন্সমেন্ট সিস্টেম (Public Announcement System) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর নির্ভরযোগ্যতা বজায় রাখা প্রশাসনের দায়িত্ব। লখনউয়ের চারবাগ রেলওয়ে স্টেশনের এই ঘটনাটি শুধু যাত্রীদের জন্য একটি অপ্রত্যাশিত বিনোদনই প্রমাণ হয়নি, বরং সোশ্যাল মিডিয়াতেও আলোচনার একটি প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে এই ঘটনাটি এও দেখিয়েছে যে, কীভাবে প্রযুক্তিগত সতর্কতা অবলম্বন না করলে যেকোনো কর্মী হঠাৎ ভাইরাল হতে পারে। একদিকে এই বিষয়টি যাত্রীদের মুখে হাসি এনেছে, অন্যদিকে রেলওয়ে প্রশাসনের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা যে, পাবলিক অ্যানাউন্সমেন্ট সিস্টেমের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থায় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। সবশেষে বলা যায়, এই ছোট্ট ভুলটি কিছুক্ষণের জন্য যাত্রীদের ক্লান্তি ও মানসিক চাপ কমিয়ে দিয়েছে, কিন্তু এর সাথে এটিও স্পষ্ট হয়েছে যে ‘মাইক অন আছে না অফ’ – এটি দেখা কতটা জরুরি!
लखनऊ के चारबाग रेलवे स्टेशन पर अनाउंसमेंट करने वाली महिला का माइक ऑन रह गया।
— Sachin Gupta (@SachinGuptaUP) June 18, 2025
वो अपनी सहकर्मी से कहती है–
''कितना बेशर्म आदमी है, औरतों को देख रहा है''
"फिर घरवाले कहते हैं ये काम कर लो"@JBreakingBajpai https://t.co/sClZcXiAiI pic.twitter.com/1JZiFkjgv9