ট্রুডোর গালে চড়! মোদি কানাডায় পা রাখতেই নড়েচড়ে বসল গোয়েন্দা সংস্থা, ফাঁস হল খালিস্তানি সত্য

কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সমস্ত অহংকার এক ঝটকায় উধাও হয়ে গেছে। কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা CSIS (কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট ট্রুডোর খালিস্তান-প্রেমের মুখোশ খুলে দিয়েছে। এই রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে স্বীকার করা হয়েছে যে, খালিস্তানি সন্ত্রাসীরা কানাডার ভূমিকে ভারতের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, অর্থ সংগ্রহ এবং ষড়যন্ত্র করার আড্ডায় পরিণত করছে। মজার বিষয় হল, এই চাঞ্চল্যকর তথ্য এমন সময় প্রকাশ পেল যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কানাডায় পৌঁছে নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রী মোদির কানাডায় পা রাখা মাত্রই কানাডার ঘুম ভাঙল এবং এই রিপোর্ট সামনে চলে এলো।
CSIS-এর রিপোর্ট খালিস্তানের আসল চেহারা উন্মোচন করল
টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, CSIS তাদের ২০২৪ সালের বার্ষিক রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলেছে, “খালিস্তানি চরমপন্থীরা কানাডাকে ভারতের বিরুদ্ধে সহিংসতা ছড়ানোর আড্ডায় পরিণত করছে।” শুধু তাই নয়, এই রিপোর্টে খালিস্তানি গোষ্ঠীগুলোকে ‘চরমপন্থী’ (Extremism) বলা হয়েছে, যা আগে কখনো ঘটেনি। ১৯৮৫ সালের এয়ার ইন্ডিয়া বোমা হামলার পর এই প্রথম কানাডা খালিস্তানিদের বিরুদ্ধে এত কঠোর শব্দ ব্যবহার করল।
ভারতের দাবি প্রমাণিত হল সত্য
ভারত বছরের পর বছর ধরে বলে আসছে যে কানাডায় খালিস্তানি সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ট্রুডোর সরকার বরাবর চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। ২০২৩ সালে তো ট্রুডো কোনো প্রমাণ ছাড়াই খালিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার দায় ভারতের উপর চাপিয়েছিলেন। ভারত এই অভিযোগগুলোকে “অযৌক্তিক” বলে অভিহিত করেছিল এবং উল্টো কানাডার বিরুদ্ধে ভারত-বিরোধী শক্তিগুলোকে মদদ দেওয়ার অভিযোগ করেছিল। এখন CSIS-এর রিপোর্ট ভারতের এই দাবিকে সিলমোহর দিয়েছে যে কানাডায় খালিস্তানি সন্ত্রাসীরা আশ্রয় পায়।
ট্রুডোর খালিস্তান প্রীতি
ট্রুডোর খালিস্তানিদের প্রতি নরম মনোভাব নতুন কিছু ছিল না। বলা হয় যে, শিখ ভোটব্যাঙ্কের কারণে তিনি খালিস্তানিদের বিরুদ্ধে কঠোরতা দেখাতেন না। তার এই মনোভাব ভারত-কানাডা সম্পর্ককে তিক্ত করে তুলেছিল। ২০২৩ সালে নিজ্জর মামলার পর তো দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরমে পৌঁছে গিয়েছিল। ভারত কানাডার বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে ফেরত পাঠিয়েছিল এবং কানাডাও একই কাজ করেছিল। কিন্তু ট্রুডোর এই রাজনীতি তার জন্য খুব ভারী পড়েছিল। তার জনপ্রিয়তা কমেছিল এবং অবশেষে ২০২৫ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছিল।
মোদি’র কানাডা সফর এবং নতুন মোড়
প্রধানমন্ত্রী মোদি ১৭ জুন ২০২৫-এ জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে কানাডায় যান। সেখানে তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন। এর ঠিক পরেই CSIS-এর এই রিপোর্ট সামনে এসেছে। এই রিপোর্ট ভারতের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক বিজয়। কানাডার মনোভাবের পরিবর্তন ইঙ্গিত দেয় যে মার্ক কার্নির সরকার পুরোনো বিতর্কগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তবে প্রশ্ন হলো, কানাডা কি এবার খালিস্তানিদের উপর কঠোরতা দেখাবে? ভারতের নজর এখন এর উপরেই।