ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের মাঝে ইরানে দুটি ভূমিকম্পের কম্পন, এর কি পরমাণু কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে?

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের মাঝে ইরানে দুটি ভূমিকম্পের কম্পন, এর কি পরমাণু কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে?

ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই ইরানে পরপর দুটি ভূমিকম্প (Earthquake) নতুন করে সন্দেহ তৈরি করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৯:১৯ মিনিটে ইরানের সেমনান প্রদেশে (Semnan Province) ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় ছিল, যার ফলে তেহরান (Tehran) সহ অনেক এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়।

এর আগে, ১৫ জুন ফোরদোর (Fordo) কাছে ২.৫ মাত্রার একটি হালকা ভূমিকম্পও রেকর্ড করা হয়েছিল, যা কথিত ইসরায়েলি বিমান হামলার (Israeli Air Strikes) পর এসেছিল।

এই দুটি ভূমিকম্পের সময় এবং স্থান পারমাণবিক কার্যক্রম (Nuclear Activities) নিয়ে চলমান জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে যখন নাতানজ (Natanz), ইসফাহান (Isfahan) এবং ফোরদোর মতো পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলি হামলার খবর সামনে আসে এবং স্যাটেলাইট ছবিতে ক্ষতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ইরান আল্পাইন-হিমালয়ান সিসমিক বেল্টে (Alpine-Himalayan Seismic Belt) অবস্থিত এবং সেখানে প্রতি বছর গড়ে ২০০০-এর বেশি ভূমিকম্প হয়, যার মধ্যে ১৫-১৬টি ভূমিকম্পের তীব্রতা ৫ বা তার বেশি হয়। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে, ইরানে ৯৬,০০০-এর বেশি ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়েছিল।

পারমাণবিক পরীক্ষার সঙ্গে কি এমন ভূমিকম্পের সম্পর্ক আছে?
ইউএসজিএস (USGS) এবং সিটিবিটিও (CTBTO)-এর মতো সংস্থাগুলোর মতে, পারমাণবিক বিস্ফোরণ (Nuclear Explosions) ভূকম্পন চাপ সৃষ্টি করে ভূমিকম্প ঘটাতে পারে, তবে এগুলো সাধারণত বিস্ফোরণের চেয়ে কম তীব্রতার হয় এবং কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। প্রাকৃতিক ভূমিকম্পে P-ওয়েভ (P-wave) এবং S-ওয়েভ (S-wave) উভয়ই থাকে, যখন পারমাণবিক বিস্ফোরণ প্রধানত P-ওয়েভ উৎপন্ন করে।

বার্কলে সিসমোলজি ল্যাব (Berkeley Seismology Lab) এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের (National Geographic) মতে, ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। সিটিবিটিও এবং স্বাধীন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ দেখায় যে সেমনান এবং ফোরদোর ভূমিকম্প প্রাকৃতিক ভূকম্পন কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার (India-Pakistan Tensions) সময়ও একই ধরনের গুজব ছড়িয়েছিল, কিন্তু ইন্ডিয়া টুডে (India Today) সিসমোগ্রাফিক প্রমাণের (Seismographic Evidence) ভিত্তিতে সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *