ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধে আমেরিকা কেন জড়ালো? ৫টি কারণ জেনে নিন

ইসরায়েল (Israel) ও ইরানের (Iran) যুদ্ধ এখন আরও বিধ্বংসী রূপ নিয়েছে, কারণ এই যুদ্ধে এবার আমেরিকাও (America) জড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকা গত রাতে ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে। ভারত মহাসাগরে ডিয়েগো গার্সিয়াতে (Diego Garcia) অবস্থিত আমেরিকা-ব্রিটেনের (Britain) যৌথ সামরিক ঘাঁটি (Joint Army Base) থেকে বি-২ স্পিরিট বোম্বার (B-2 Spirit Bomber) ইরানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং ইরানের ৩টি পরমাণু ঘাঁটিতে (Nuclear Sites) বাঙ্কার বাস্টার বোমা (Bunker Buster Bombs) ফেলে ফিরে আসে।
আমেরিকা ইরানের ফোর্দো (Fordo), নাতানজ (Natanz) এবং ইস্পাহান (Isfahan) নিউক্লিয়ার সাইটগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। ফোর্দো নিউক্লিয়ার সাইটে সবচেয়ে বেশি বোমা বর্ষণ করা হয়েছে। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) বিশ্বকে ইরানের উপর হামলার কথা জানিয়েছেন এবং ইরানকে যুদ্ধবিরতির (Ceasefire) পরামর্শও দিয়েছেন। তবে এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, আমেরিকা কেন এই যুদ্ধে জড়ালো? অথচ আমেরিকা ইরানের উপর হামলার প্রস্তুতি নেওয়ার পরেও ১৫ দিনের জন্য হামলা পিছিয়ে দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও, ১৫ দিনের সময় শেষ হওয়ার আগেই আমেরিকা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, আমেরিকার এমন কী বাধ্যবাধকতা ছিল যে তাকে যুদ্ধে নামতে হলো?
১. কূটনীতি (Diplomacy)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের উপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন, এর পেছনে বড় কারণ হলো কূটনীতি। সিএনএন (CNN) সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে, ট্রাম্পের আপাতত ইরানের উপর হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা ছিল না, তবে তিনি মনে করেন যে কূটনীতি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তাই ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা জরুরি হয়ে পড়েছিল। গত কয়েক দিনের পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ইরানের উপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২. খামেনেই (Khamenei)
ইরানের উপর আমেরিকার হামলার দ্বিতীয় কারণ হলো ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই (Ayatollah Ali Khamenei), যাকে আমেরিকা ও ইসরায়েল শেষ করতে চায়। খামেনেই তার পরিবার নিয়ে পাহাড়ের ভেতরে তৈরি বাঙ্কারে লুকিয়ে আছেন। যদিও তিনি কোথায় লুকিয়ে আছেন, সে সম্পর্কে তথ্য আছে, কিন্তু সেই বাঙ্কারটি কেবল আমেরিকা ধ্বংস করতে পারে। যদিও আপাতত শুধু ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে, তবে আমেরিকা খামেনেইয়ের বাঙ্কারও ধ্বংস করতে পারে।
৩. পরমাণু ঘাঁটি (Nuclear Sites)
আমেরিকার মূল লক্ষ্য ইরানকে পরমাণু বোমা তৈরি করা থেকে বিরত রাখা। আমেরিকার সন্দেহ যে ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করছে এবং এর জন্য সে পরমাণু ঘাঁটি তৈরি করছে। ইসরায়েল ও আমেরিকা যৌথভাবে ইরানের পরমাণু ঘাঁটিগুলো চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ফোর্দোতে অবস্থিত, যা মাটির নিচে ৯০ মিটার গভীরে তৈরি। এই পরমাণু ঘাঁটিটি কেবল আমেরিকা ধ্বংস করতে পারে। তাই আমেরিকা ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে।
৪. নিউক্লিয়ার প্রোগ্রাম (Nuclear Program)
ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধে আমেরিকার জড়িয়ে পড়ার একটি কারণ হলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচি। যদিও ইরান সরাসরি পরমাণু বোমা তৈরির কথা অস্বীকার করে আসছে, তবে ইরান প্রায়শই পরমাণু কর্মসূচি চালানোর কথা বলেছে। আমেরিকা চায় না যে ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করুক। ইসরায়েলও ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির বিরোধিতা করে আসছে। আমেরিকা স্পষ্ট ভাষায় বলেছে যে, ইরানকে কোনো মূল্যে পরমাণু বোমা তৈরি করতে দেওয়া হবে না।
৫. মুসলিম দেশ (Muslim Countries)
ইরানের উপর আমেরিকার হামলার একটি কারণ হলো মুসলিম দেশগুলো। ইরান একটি মুসলিম দেশ। যদি ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করে ফেলে, তবে সব মুসলিম দেশ তাকে সমর্থন করতে পারে। সব মুসলিম দেশ একজোট হয়ে আমেরিকার বিরোধিতা করতে পারে। আমেরিকা এমনটা চাইবে না। আমেরিকা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দেশ এবং সে চাইবে না যে অন্য কেউ মহাশক্তিধর হয়ে উঠুক। সম্ভবত এই কারণেই আমেরিকা ইরানকে পরমাণু বোমা তৈরি করতে দিতে চায় না, তাই সে ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে।
🚨 Major escalation: The US has launched airstrikes on Iran’s top nuclear facilities, including Fordow, Natanz, and Isfahan. This marks a turning point in the regional conflict, with the US directly targeting Iran’s nuclear infrastructure for the first time.
— Malik Hasnain (@MalikHasnain22) June 22, 2025
•Fordow, Iran’s… pic.twitter.com/y7EmgTwZ3k