মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে, B-2 বোমারু বিমান ও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল আমেরিকা!
আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকা ইরানের ওপর এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় ও সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান চালিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার গভীর রাতে নিশ্চিত করেছেন যে, মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল পারমাণবিক কেন্দ্র— ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানে সরাসরি হামলা চালিয়েছে। অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বিশেষ বিমানের মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ‘টার্গেটেড স্ট্রাইক’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রাম্পের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের ভূগর্ভস্থ ও বাঙ্কার সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্র ফোরদো ধ্বংস করতে B-2 স্পিরিট স্টিলথ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে। এই বিমানগুলো GBU-57/B ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনেট্রেটর (MOP) নামের বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলেছে, যার ওজন প্রায় ১৩,৬০০ কিলোগ্রাম এবং এটি ৬০ মিটার গভীর পর্যন্ত কংক্রিট ভেদ করতে সক্ষম। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফোরদোতে ছয়টি GBU-57 বোমা এবং নাতাঞ্জে দুটি বোমা ফেলা হয়েছে। এত গভীর ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক কেন্দ্রকে সরাসরি এত শক্তিশালী বোমা দিয়ে লক্ষ্যবস্তু করা এবারই প্রথম।
এছাড়াও, আমেরিকা তাদের সাবমেরিন থেকে ৩০টি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার সরাসরি লক্ষ্য ছিল নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা। টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দূরপাল্লার, জিপিএস-নির্দেশিত এবং উচ্চ-নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র, যা আমেরিকা এর আগেও ইরাক ও সিরিয়ার মতো অভিযানে ব্যবহার করেছে। এই সম্মিলিত হামলাকে মার্কিন সামরিক কৌশলের একটি বড় এবং निर्णायक পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফোরদোর মতো সুরক্ষিত পারমাণবিক ঘাঁটিতে MOP বোমা ব্যবহার এটাই প্রমাণ করে যে, আমেরিকা এখন ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে অত্যন্ত কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা ইরানের সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এর প্রভাব দীর্ঘকাল ধরে অনুভূত হবে।
এই সামরিক পদক্ষেপের পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। ইসরায়েল তাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিকে ‘এসেনশিয়াল মোড’-এ নিয়ে এসেছে, অন্যদিকে ইরান আমেরিকাকে ‘চরম মূল্য চোকাতে হবে’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইরানের সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আশঙ্কায় আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলো উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘ এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ সংযম প্রদর্শনের আবেদন জানিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এই সংঘাত সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে এক বিশাল যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিতে পারে।