পিঠের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন? AIIMS-এর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানালেন জীবনযাত্রায় কী কী পরিবর্তন জরুরি

পিঠের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন? AIIMS-এর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানালেন জীবনযাত্রায় কী কী পরিবর্তন জরুরি

পিঠের হালকা ব্যথাও অনেক সময় বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পিঠে ব্যথা শুরু হলে ঠিকমতো ওঠা-বসা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। সাধারণত পিঠের ব্যথার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে, যেমন – ভুল ভঙ্গিতে বসা, কোনো আঘাত, ভুলভাবে শোয়া, বা কোনো চিকিৎসার কারণেও পিঠে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া মানসিক চাপ, স্থূলতা, ব্যায়ামের অভাব এবং স্থবির জীবনযাত্রাও পিঠের ব্যথার কারণ হয়। তাই আপনিও যদি প্রায়ই পিঠের ব্যথায় ভুগে থাকেন, তাহলে ডাঃ অরুণ এল নায়কের দেওয়া টিপস আপনার কাজে আসতে পারে। ডাঃ অরুণ এল নায়ক একজন কনসালটেন্ট নিউরোসার্জন এবং দিল্লির AIIMS থেকে নিউরোলজিতে প্রশিক্ষিত। চলুন জেনে নিই পিঠের ব্যথা নিয়ে ডাক্তারের কী মত।

পিঠের ব্যথা দূর করতে ডাক্তারের পরামর্শ
ডাঃ অরুণের মতে, ৪০ বছর বয়সের কাছাকাছি আসার সাথে সাথে মেরুদণ্ড রূপান্তরের দিকে এগোতে থাকে। স্পাইনাল ডিস্ক ডিহাইড্রেটেড হতে শুরু করে, লিগামেন্ট মোটা হয় এবং মেরুদণ্ডের জোড়গুলো শক্ত হয়ে যায়। এসবের কারণেই ব্যথা শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে একজন নিউরোসার্জন জীবনযাত্রার সাথে জড়িত কিছু টিপস দিচ্ছেন যা পিঠের সমস্যা দূর রাখতে সাহায্য করবে।

ভঙ্গি ঠিক করা: চেয়ারে বসে ডেস্কের উপর ঝুঁকে বসা মেরুদণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে। তাই সোজা হয়ে বসা জরুরি। বুক সোজা রেখে বসুন এবং কাজ করার সময় বিশেষভাবে ভঙ্গি বজায় রাখুন। রান্না করা, বাগান করা বা ব্যায়াম করার সময়ও ভঙ্গি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

কোর মাসল শক্তিশালী করা: অ্যাবস (পেটের পেশী) মেরুদণ্ডের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। প্ল্যাঙ্কস, ব্রিজেস এবং বার্ড ডগস পোজকে আপনার ওয়ার্কআউটে অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে মেরুদণ্ডের অনেক উপকার হয়।

প্রতিদিন হাঁটা: প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটলে শরীরের জড়তা দূর হয়। ডাক্তার বলেন, হাঁটা মেরুদণ্ডের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে। খেয়াল রাখবেন, সবসময় সমতল পৃষ্ঠে হাঁটবেন।

হিপস স্ট্রেচ করা: টাইট হিপস মানে পিঠ সংক্রান্ত সমস্যা। এর জন্য হিপস স্ট্রেচিং করুন। আপনার ওয়ার্কআউট রুটিনে হিপসকে নমনীয় করে তোলে এমন ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন।

স্মার্ট ঘুম: ডাক্তার বলেন যে নরম ও দৃঢ় ম্যাট্রেস অর্থাৎ গদিতে ঘুমান। একপাশে কাত হয়ে ঘুমান এবং আপনার হাঁটুর মাঝে একটি বালিশ রাখুন।

সঠিক উপায়ে ওজন তোলা: আপনার নীচের পিঠ (Lower Back) রক্ষা করে ওজন তুলুন। খেয়াল রাখবেন যে আপনি আপনার পিঠের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবেন না।

হাইড্রেটেড থাকা: সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা অত্যন্ত জরুরি। জল পান করতে থাকলে শরীরে হাইড্রেশন বজায় থাকে, এর ফলে স্পাইনাল ডিস্ক জল পায় এবং মেরুদণ্ড স্পঞ্জের মতো থাকে, অর্থাৎ এতে মেরুদণ্ডের উপকার হয়। তাই সারাদিন ৩ থেকে সাড়ে তিন লিটার জল অবশ্যই পান করুন।

পেটের চর্বি কমানো: পেটের চর্বি (Belly Fat) অর্থাৎ ঝুলে থাকা পেট মেরুদণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর জন্য আপনার পেটের চর্বি কমানোও অত্যন্ত জরুরি।

অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ডায়েট: হলুদ, বেরি এবং সবুজ শাকসবজি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাবলীতে ভরপুর থাকে এবং শরীরে প্রদাহ রোধ করে। এই খাবারগুলি পিঠ বা হাড়ের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

মেরুদণ্ড পরীক্ষা: বছরে একবার আপনার মেরুদণ্ডের চেকআপ অবশ্যই করান। এতে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে তার প্রাথমিক লক্ষণগুলো সনাক্ত করা যাবে এবং সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

View this post on Instagram

A post shared by Dr Arun L Naik MCh (@doclogues)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *