ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ: অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ল! ভারতে কি এখন গাড়ি চালানো ব্যয়বহুল হবে?

ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রভাব এখন ভারতে গাড়ি ও বাইক চালকদের পকেটে পড়তে পারে। আগামী দিনে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবার দাম বাড়ার কারণ কোনো অভ্যন্তরীণ ইস্যু নয়, বরং আন্তর্জাতিক সংকট।
কী ঘটেছে?
সম্প্রতি আমেরিকা ও ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এর জেরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়েছে এবং অপরিশোধিত তেলের সরবরাহে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রায় ২.৭% বেড়ে ৭৯.১২প্রতিব্যারেল∗∗এবংমার্কিনক্রুডেরদাম∗∗৭৫.৯৮ প্রতি ব্যারেল-এ পৌঁছেছে, যা জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
ইরানের গুরুত্ব কেন?
ইরান বিশ্বের নবম বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং প্রতিদিন ৩৩ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে। এর প্রায় অর্ধেক তেল রপ্তানি হয়। যদি যুদ্ধ আরও তীব্র হয়, তাহলে ইরান হরমুজ প্রণালী (Strait of Hormuz) বন্ধ করে দিতে পারে, যা দিয়ে বিশ্বের ২০% তেল এবং ২৫% তরল গ্যাস পরিবাহিত হয়। এর ফলে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
ভারতে কী প্রভাব পড়বে?
ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দামে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে, কারণ এই দাম সম্পূর্ণরূপে বৈশ্বিক তেল বাজারের গতিবিধির উপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে, ইন্ডিয়ান অয়েল, এইচপিসিএল এবং বিপিসিএল-এর মতো তেল কো ম্পা নিগুলো অভ্যন্তরীণ দাম বাড়াতে পারে।
গাড়ি চালানো কি ব্যয়বহুল হবে?
যদি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারের উপরে যায়, তাহলে ভারতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। বর্তমানে দিল্লিতে পেট্রোল ৯৪.৭৭ টাকা এবং ডিজেল ৮৭.৬৭ টাকা, মুম্বাইয়ে পেট্রোল ১০৩.৫০ টাকা এবং ডিজেল ৯০.০৩ টাকা, চেন্নাইয়ে পেট্রোল ১০০.৮০ টাকা এবং ডিজেল ৯২.৩৯ টাকা প্রতি লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে।
এই সংকটের সময়ে কিছু ছোট কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে আপনি খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। যেমন: গাড়ির টায়ারের চাপ সবসময় সঠিক রাখুন যাতে গাড়ির মাইলেজ ভালো থাকে। অপ্রয়োজনীয় যাত্রা এড়িয়ে চলুন এবং যেখানে সম্ভব, কার পুলিং করুন বা গণপরিবহন ব্যবহার করুন।
বৈদ্যুতিক বা হাইব্রিড গাড়ির দিকে নজর দিন, কারণ ভবিষ্যতে এগুলোই অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক বিকল্প প্রমাণিত হতে পারে। যদি যুদ্ধ সীমিত পরিসরে থাকে, তবে ভারতের উপর প্রভাব কম হবে, কিন্তু পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তাহলে গাড়ি চালানো নিশ্চিতভাবেই ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে।