৫৭১৮৫ কোটি টাকার ঋণে জর্জরিত এই কো ম্পা নির উপর আদানি, বেদান্ত, ডালমিয়ার নজর, জেনে নিন কার পরিকল্পনায় জোর আছে; কে জিতবে বাজি

৫৭১৮৫ কোটি টাকার ঋণে জর্জরিত এই কোম্পানির উপর আদানি, বেদান্ত, ডালমিয়ার নজর, জেনে নিন কার পরিকল্পনায় জোর আছে; কে জিতবে বাজি

রিয়েল এস্টেট, সিমেন্ট, হসপিটালিটি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কনস্ট্রাকশন সেক্টরে নিজেদের আধিপত্য স্থাপনকারী দিগ্গজ সংস্থা জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড (JAL) আরও একবার খবরের শিরোনামে।

আসলে, জেএএল গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ কো ম্পা নি ঋণের জালে ফেঁসেছে এবং এটিকে কেনার জন্য গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ (Adani Group), অনিল আগরওয়ালের বেদান্ত (Vedanta), এবং ডালমিয়া ভারত সিমেন্টের (Dalmia Bharat Cement) মতো বড় সংস্থাগুলো আগ্রহ দেখিয়েছে। এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দিগ্গজ সংস্থাগুলো জেএএল-কে দেউলিয়া প্রক্রিয়া (CIRP) এর মাধ্যমে অধিগ্রহণ করার জন্য তাদের সমাধান পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। জেএএল-এর উপর ₹৫৭,১৮৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।

জেএএল-কে কেনার দৌড়ে সুরক্ষা গ্রুপও (Suraksha Group) বিড করেছিল, যারা এর আগে জয়প্রকাশ ইনফ্রাটেক (Jaypee Infratech) কিনেছিল। এছাড়া বাবা রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদও (Patanjali Ayurved) প্রাথমিক পর্যায়ে আগ্রহ দেখিয়েছিল, কিন্তু পরে তারা পিছিয়ে যায়।

কারা কারা দৌড়ে আছে?
২০২৪ সালের এপ্রিলে ২৫টি সংস্থা জেএএল-কে কেনার জন্য এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট (EOI) জমা দিয়েছিল। এর মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজেস (Adani Enterprises), বেদান্ত, ডালমিয়া ভারত সিমেন্ট, টরেন্ট পাওয়ার (Torrent Power), জিএমআর বিজনেস অ্যান্ড কনসালটেন্সি (GMR Business & Consultancy), জিন্দাল ইন্ডিয়া পাওয়ার (Jindal India Power), জিন্দাল পাওয়ার (Jindal Power), কোটাক অল্টারনেট অ্যাসেট ম্যানেজারস (Kotak Alternate Asset Managers), ওবেরয় রিয়েলটি (Oberoi Realty), এবং পিএনসি ইনফ্রাটেক (PNC Infratech)-এর মতো বড় নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া আরও কিছু সংস্থা যেমন অথাম ইনভেস্টমেন্ট (Autham Investment), ভিনরো কমার্শিয়াল (Vinro Commercial), ডিকি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (Dicky Asset Management), এবং রাশমি মেটালিকসও (Rashmi Metalliks) এই দৌড়ে ছিল। তবে, ২০২৫ সালের ২৪শে জুনের ডেডলাইন পর্যন্ত শুধুমাত্র আদানি গ্রুপ, বেদান্ত, ডালমিয়া ভারত সিমেন্ট, এবং সুরক্ষা গ্রুপই চূড়ান্ত রেজোলিউশন প্ল্যান জমা দিয়েছে।

সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল, সিদ্ধান্তের উপর নজর
জেএএল-এর ঋণদাতারা সম্ভাব্য বিডকারীদের অনুরোধে, সমাধান পরিকল্পনা জমা দেওয়ার সময়সীমা ৯ই জুন থেকে বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ২৪শে জুন পর্যন্ত করেছিল। ২৫শে জুন অর্থাৎ আজ কমিটি অফ ক্রেডিটর্স (CoC)-এর ১৫তম বৈঠকে এই পরিকল্পনাগুলোর পর্যালোচনা হবে, যা কো ম্পা নির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

কী ঘটনা ঘটেছে জেএএল-এর সাথে?
জয়প্রকাশ অ্যাসোসিয়েটসকে ২০২৪ সালের ৩রা জুন ন্যাশনাল কো ম্পা নি ল ট্রাইব্যুনাল (NCLT), এলাহাবাদ বেঞ্চ দ্বারা কর্পোরেট ইনসলভেন্সি রেজোলিউশন প্রসেস (CIRP) এর অধীনে পাঠানো হয়েছিল। কো ম্পা নি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছিল, যার পর ঋণদাতারা ₹৫৭,১৮৫ কোটি টাকার দাবি পেশ করেছিল। উল্লেখ্য, ন্যাশনাল অ্যাসেট রিকনস্ট্রাকশন কো ম্পা নি লিমিটেড (NARCL) স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI) এর নেতৃত্বাধীন ঋণদাতাদের কনসর্টিয়াম থেকে জেএএল-এর স্ট্রেনড লোন নিয়েছিল এবং এখন তারা এর জন্য সবচেয়ে বড় দাবিদার।

কীভাবে সংকটে পড়ল কো ম্পা নি?
১৯৭৯ সালে জয়প্রকাশ গোর (Jayprakash Gaur) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জয়প্রকাশ গ্রুপ যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে (Yamuna Expressway), জয়প্রকাশ গ্রিনস ভিশটাউন (Jayprakash Greens Wishtown – নয়ডা), এবং জেওয়ার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (Jewar International Airport) এর কাছে জয়প্রকাশ ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস সিটি (Jayprakash International Sports City) এর মতো বড় প্রকল্প তৈরি করেছিল। কিন্তু বিশাল ঋণ এবং প্রকল্পগুলোতে দেরির কারণে গ্রুপটি সংকটে পড়ে। জয়প্রকাশ ইনফ্রাটেককে আগেই সুরক্ষা গ্রুপ CIRP এর মাধ্যমে অধিগ্রহণ করেছিল, এটিকে নয়ডা-গ্রেটার নয়ডায় ২০,০০০ অ্যাপার্টমেন্ট সম্পূর্ণ করতে হবে। জেএএল-এর সাবসিডিয়ারি জয়প্রকাশ পাওয়ার ভেঞ্চার্স (JPVL)ও ঋণে জর্জরিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *