চীন-পাকিস্তানের ঘুম হারাম…’ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রযুক্তি যা নষ্ট হবে না এবং রাডার ধরতে পারবে না, এর পেছনে বিশ্ব পাগল

চীন-পাকিস্তানের ঘুম হারাম…’ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রযুক্তি যা নষ্ট হবে না এবং রাডার ধরতে পারবে না, এর পেছনে বিশ্ব পাগল

সম্প্রতি আমেরিকার একটি কো ম্পা নি উরসা মেজর (Ursa Major) একটি বড় চুক্তি করেছে। তারা স্ট্র্যাটো লঞ্চের ট্যালন-এ হাইপারসোনিক টেস্ট ভেহিকেল (Stratolaunch’s Talon-A Hypersonic Test Vehicle)-এর জন্য H13 রকেট ইঞ্জিন (H13 rocket engine) তৈরির কাজ পেয়েছে।

এই চুক্তির মূল্য $৩২.৯ মিলিয়ন। হাইপারসোনিক (Hypersonic) মানে খুব দ্রুত গতি। এই প্রযুক্তি বিশ্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। উরসা মেজর কো ম্পা নি এখন স্ট্র্যাটো লঞ্চকে এই বিশেষ ইঞ্জিন দেবে। এতে আমেরিকার নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে। এটি হাইপারসোনিক প্রযুক্তির দৌড়ে একটি বড় পদক্ষেপ। আমেরিকা সহ বিশ্বের অনেক দেশ হাইপারসোনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ভারতে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) এই বছরের এপ্রিলে ১,০০০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন (Scramjet engine)-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এই পরীক্ষা ভারতের ২০২৪ সালের নভেম্বরে করা দীর্ঘ পাল্লার হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার অংশ।

কী এই হাইপারসোনিক প্রযুক্তি, যার পেছনে উন্মাদ বিশ্ব
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জেএস সোধী (JS Sodhi)-এর মতে, হাইপারসোনিক প্রযুক্তি শব্দের গতির ৫ গুণ বেশি গতিতে চলা ক্ষেপণাস্ত্র এবং যানবাহনের সাথে সম্পর্কিত। এতে ম্যাক ৫ (Mach 5) এর গতি অর্থাৎ প্রায় ৬,১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার বেশি গতি থাকে। হাইপারসোনিক প্রযুক্তিতে উন্নত প্রপোলশন সিস্টেম (advanced propulsion system), উন্নত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (advanced control system) থাকে, যা এর দ্রুত গতি এবং কৌশল প্রদর্শনের জন্য প্রয়োজনীয়। ভারত যে হাইপারসোনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে, তার পাল্লা ১৫০০ কিলোমিটারের বেশি। এই ক্ষেপণাস্ত্র বায়ু, জল এবং স্থল তিন জায়গা থেকেই শত্রুর উপর আক্রমণ করতে পারে।

ব্যালাস্টিক এবং হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে পার্থক্য কী
ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি একটি পূর্বাভাসযোগ্য প্যারাবোলিক গতিপথ (parabolic trajectory) অনুসরণ করে, যা মহাকাশে নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তারা উচ্চ গতিতে বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করে তাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায়। তবে, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি তাদের অবতরণের সময় হাইপারসোনিক গতি অর্জন করতে পারে, কিন্তু নিক্ষেপ করার পর তাদের গতিপথ পরিবর্তন করার ক্ষমতা থাকে না। অন্যদিকে, হাইপারসোনিক অস্ত্রের নতুন প্রজন্ম বুস্ট-গ্লাইড (boost-glide) প্রযুক্তি ব্যবহার করে। রকেট বুস্টার দ্বারা উৎক্ষেপণের পর, এই যানগুলি হাইপারসোনিক গতিতে বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করে এবং বায়ুগতীয় লিফট (aerodynamic lift) ব্যবহার করে তাদের লক্ষ্যের দিকে নির্দেশিত হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী তারা তাদের পথও পরিবর্তন করতে পারে।

স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন কী করে, এটি কতটা জরুরি
বুস্ট গ্লাইড যানের পাশাপাশি হাইপারসোনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলি একটি ভিন্ন নীতিতে কাজ করে। রকেট বুস্টার ব্যবহার করে হাইপারসোনিক গতিতে ত্বরান্বিত হওয়া এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি একটি এয়ার-ব্রিদিং স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনে রূপান্তরিত হয় যা তাদের উড্ডয়নের সময় শক্তি যোগায়। স্ক্র্যামজেট প্রপোলশন ক্ষেপণাস্ত্রকে ঐতিহ্যবাহী রকেট প্রপোলশনের প্রয়োজন ছাড়াই হাইপারসোনিক গতি বজায় রাখার অনুমতি দেয়, যার ফলে এটি দীর্ঘ পাল্লার আক্রমণের জন্য আরও কার্যকর হয়। এই প্রযুক্তি তখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, যখন আমেরিকান ইঞ্জিনের উপর নির্ভরশীল ভারত এখন নিজেই এই প্রযুক্তি আরও অনেক দেশ থেকে অর্জন করতে চাইছে। এমনকি এইচএএল (HAL) এবং জিই অ্যারোস্পেস (GE Aerospace) ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করতে চলেছে, যার অধীনে তারা তেজস মার্ক ২ (Tejas Mark 2) এবং এএমসিএ (AMCA) বিমানের জন্য ভারতে এফ-৪১৪ জেট ইঞ্জিন (F-414 jet engine) যৌথভাবে উৎপাদন করবে।

হাওয়া থেকেই অক্সিজেন নিয়ে উড়ে যায়
ভারত যে হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে, তাতে একটি বিশেষ ইঞ্জিন লাগানো আছে, যাকে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন বলে। এই ইঞ্জিন বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে জ্বালানি পোড়ায়। এর ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্র দীর্ঘ সময় ধরে খুব দ্রুত গতিতে উড়তে পারে। এটাই একে বিপজ্জনক করে তোলে। ডিআরডিও এই ইঞ্জিনের ভূ-পৃষ্ঠে ১,০০০ সেকেন্ড পর্যন্ত সফল পরীক্ষা করেছে। এতে বোঝা যায় যে, ভারত শীঘ্রই এই নতুন প্রযুক্তি বাস্তবে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর জন্য হাইপারসোনিক প্রযুক্তি জরুরি
পারমাণবিক-সশস্ত্র দেশগুলোর জন্য হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সুরক্ষার একটি অতিরিক্ত স্তর প্রদান করে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর উড্ডয়নের মাঝখানে দিক পরিবর্তন করার এবং অত্যন্ত দ্রুত গতিতে উড়ার ক্ষমতা তাদের একটি কৌশলগত সম্পদ করে তোলে। এমন পরিস্থিতিতে হাইপারসোনিক প্রযুক্তি কোনো দেশের ক্ষেপণাস্ত্রকে আরও বিধ্বংসী করে তোলে। তাই এই প্রযুক্তি ভারতের জন্য অত্যন্ত জরুরি। হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন হয়।

হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কীভাবে করবেন
হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিকাশ একটি প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ, কারণ উড্ডয়নের সময় তাদের অনেক চরম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। উচ্চ গতির কারণে বায়ুমণ্ডলীয় ঘর্ষণ হয়, যা প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন করে। এমন পরিস্থিতিতে এত বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে সক্ষম উন্নত উপাদানের প্রয়োজন হয়, যেমন কার্বন-কার্বন কম্পোজিট (carbon-carbon composite) বা তাপ প্রতিরোধী মিশ্র ধাতু।

ভারত কেন হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে?
ভারতের হাইপারসোনিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ২০০৭ সালেরও অনেক আগে শুরু হয়েছিল, যখন এটি প্রথম রাশিয়ার সাথে যৌথ উদ্যোগে ব্রাহ্মোস (BrahMos) ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ নিয়েছিল। ২০০৪ সালে ভারত প্রথমবারের মতো হাইপারসোনিক প্রযুক্তি প্রদর্শনী যানের তার নিজস্ব বিকাশ প্রকাশ করে। ২০২০ সালের ফ্লাইট টেস্টে তার স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন প্রদর

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *