স্বামী রাজি না থাকলেও মুসলিম মহিলার খুলার মাধ্যমে তালাকের অধিকার, হাইকোর্টের বড় রায়

মুসলিম মহিলা চাইলে স্বামীর সম্মতি ছাড়াই একতরফাভাবে তালাক নিতে পারবেন। তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট (Telangana High Court) মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানি করে এই রায় দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে যে, যদি স্বামী তালাকের জন্য রাজি নাও থাকেন, তবুও স্ত্রী বিচ্ছেদ চাইলে খুলার (Khula) মাধ্যমে তা সম্ভব।
খুলা হলো মুসলিম মহিলাদের একটি অধিকার, যার অধীনে তারা তালাকের আবেদন করতে পারেন। পুরুষরা যখন বিবাহ বিচ্ছেদের উদ্যোগ নেন, মুসলিম আইনে তাকে তালাক (Talaq) বলা হয়, আর মহিলাদের পক্ষ থেকে করা আবেদনকে খুলা বলা হয়। বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য (Justice Mousumi Bhattacharya) এবং বিচারপতি মধুসূদন রাওয়ের (Justice Madhusudan Rao) বেঞ্চ বলেছেন যে, মহিলার জন্য কোনো মুফতির কাছ থেকে খুলানামা (Khulanama) নেওয়াও জরুরি নয়।
আদালত বলেছেন যে, খুলার মাধ্যমে তালাক নেওয়ার ক্ষেত্রে মুফতির রায় কেবল পরামর্শের জন্য। তার কোনো কথাকেই চূড়ান্ত রায় হিসেবে ধরা যাবে না। বেঞ্চ বলেছে যে, ব্যক্তিগত বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ করা ভুল। যদি কোনো মহিলা খুলার জন্য আবেদন করেন, তাহলে তার প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হতে পারে। বেঞ্চ বলেছে যে, মুসলিম মহিলাদের খুলা করার অধিকার স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং তাতে স্বামী বা আদালতের সম্মতিরও একটি সীমা আছে। আদালত বলেছে যে, এই ধরনের মামলায় আদালতের ভূমিকা হলো তালাকের উপর সীলমোহর দেওয়া, যাতে উভয় পক্ষের জন্য আইনি পথ সহজ হয়।
আসলে, একজন মুসলিম পুরুষ পারিবারিক আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ওই পুরুষটি বলেছিলেন যে, তিনি তালাকের সার্টিফিকেটকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, কিন্তু পারিবারিক আদালত তার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তিনি বলেন যে, তিনি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে অস্বীকার করেছিলেন। আদালত খুলার উপর বিতর্কের সময় কোরআনেরও (Quran) উল্লেখ করেছেন। বেঞ্চ বলেছে যে, কোরআনে খুলা করার পূর্ণ অধিকার মহিলাকে দেওয়া হয়েছে। এর শর্তাবলীতে এটা অন্তর্ভুক্ত নয় যে, তালাকের জন্য স্বামীর সম্মতি থাকতে হবে। বেঞ্চ বলেছে যে, যদি পুরুষ তালাক না নিতে চান তাহলে কী হতে পারে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।