‘মার্কিন হামলায় পরমাণু কেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষতি’, ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নিয়ে মুখ খুলল ইরান

২২শে এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানকে লক্ষ্য করে এক বিশাল সামরিক অভিযান চালানো হয়েছিল, যার নাম ছিল ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’। এই অভিযানে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোকে নিশানা করা হয়। প্রাথমিকভাবে হামলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য না এলেও, এখন ইরান নিজেই স্বীকার করেছে যে, মার্কিন হামলায় তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই (Ismail Baghahi) বুধবার নিশ্চিত করেছেন যে, ২২শে এপ্রিলের এই আক্রমণে দেশের পারমাণবিক অবকাঠামো “মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত” হয়েছে। বাঘাই ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হননি, তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, রবিবার মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান দ্বারা ব্যবহৃত বাঙ্কার-বাস্টার বোমার হামলা অত্যন্ত তীব্র ছিল। তিনি বলেন, “আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
অপারেশন ‘মিডনাইট হ্যামার’ ছিল ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার একটি অত্যন্ত গোপন এবং বৃহৎ সামরিক অভিযান, যা রবিবার ভোররাতে শুরু হয়েছিল। পেন্টাগন (Pentagon) জানিয়েছে যে, এই অভিযানে ১২৫টিরও বেশি মার্কিন যুদ্ধবিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র অংশ নিয়েছিল। জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের প্রধান জেনারেল ড্যান কেন (General Dan Kane) রবিবার জানান যে, এই হামলা ইরানের দুটি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্র, ফোরডো (Fordo) এবং নাতাঞ্জ (Natanz), এর উপর চালানো হয়েছিল। এর পাশাপাশি ইস্ফাহান (Isfahan) শহরেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। জেনারেল ড্যান কেন আরও বলেন, “আমরা ইরানের সেই লক্ষ্যবস্তুগুলো বেছে নিয়েছিলাম যা সরাসরি তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত ছিল। অপারেশনটি এমনভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল যাতে সাধারণ নাগরিকদের কোনো ক্ষতি না হয়।” এই অভিযানে বোমারু বিমান, ফাইটার জেট, ট্যাঙ্কার (জ্বালানি ভরার বিমান) এবং গুপ্তচর বিমানসহ ১২৫টিরও বেশি মার্কিন বিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। এর মধ্যে বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানও (B-2 Stealth Bombers) ছিল, যা মিসৌরি থেকে উড়ে এসেছিল। প্রতিটি বোমারু বিমান প্রায় ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বিশেষ বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলেছিল, যা মাটির নিচে লুকানো ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করতে সক্ষম। হামলাটি রাত ৬:৪০টায় (পূর্ব সময় অনুযায়ী) শুরু হয় এবং সাতটার মধ্যে সমস্ত বিমান ইরানি আকাশসীমা ত্যাগ করে। ৯/১১-এর পর বি-২ বোমারু বিমানের এটিই ছিল দীর্ঘতম উড়ান।