ধর্মের দেয়াল ভাঙল পূর্বস্থলী! এক হেঁশেলে রান্না হবে শিশুদের খাবার

পূর্ব বর্ধমানের কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দুই দশকের ধর্মীয় বিভাজনের প্রথা ভেঙে এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হিন্দু ও মুসলিম পড়ুয়াদের জন্য আলাদা রান্না, আলাদা রাঁধুনি ও পৃথক বাসনপত্রের নিয়মে চলা মিড-ডে মিলের প্রথা বন্ধ হয়েছে। স্কুলের ৭২ জন পড়ুয়া—৪৩ জন হিন্দু ও ২৯ জন মুসলিম—এখন থেকে একই রান্না একসঙ্গে খাবে। প্রধান শিক্ষক তাপসবাবুর উদ্যোগে এই পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, “ধর্ম নয়, শিক্ষাই শিশুদের একমাত্র পরিচয়। আমরা এক হেঁশেলে সবার জন্য ভালো খাবার চাই।” এই সিদ্ধান্ত শিক্ষক ও অভিভাবকদের বৈঠকে চূড়ান্ত হয়, যেখানে পুলিশও উপস্থিত ছিল।
এতদিন স্কুলে দুটি ওভেনে, আলাদা হাঁড়ি-কড়াই ও খুন্তি ব্যবহার করে রান্না হত, যা খরচ বাড়িয়ে তুলছিল। এই অযৌক্তিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে অভিভাবকরা ঐকমত্যে পৌঁছান। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শিশুদের একসঙ্গে খাওয়া ও শেখার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। এই পদক্ষেপ সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই উদ্যোগ শিশুদের মনে ঐক্যের বীজ বুনে দেবে। এই স্কুল এখন শুধু শিক্ষার কেন্দ্র নয়, সামাজিক সমন্বয়ের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।