হোয়াটসঅ্যাপে বিপদ! ইরানের পর এবার এই দেশও কর্মীদের অ্যাপ সরানোর নির্দেশ দিল, জানুন কেন এই তোলপাড়

হোয়াটসঅ্যাপে বিপদ! ইরানের পর এবার এই দেশও কর্মীদের অ্যাপ সরানোর নির্দেশ দিল, জানুন কেন এই তোলপাড়

আমেরিকায় এবার হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) নিয়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মার্কিন সংসদ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’ (House of Representatives) নিরাপত্তার কারণে সমস্ত সরকারি ডিভাইস থেকে হোয়াটসঅ্যাপ সরানোর নির্দেশ জারি করেছে। জানানো হয়েছে যে, ডেটা প্রাইভেসি (data privacy) এবং সাইবারসিকিউরিটি (cybersecurity) বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার একটি অফিসিয়াল মেমোর (official memo) মাধ্যমে সংসদের সমস্ত কর্মীকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

সাইবারসিকিউরিটি অফিস, যা হাউস-এর চিফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসারের (CAO) অধীনে কাজ করে, তারা সতর্ক করেছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর ডেটার নিরাপত্তা নিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখে না এবং এতে অনেক নিরাপত্তা ত্রুটি রয়েছে। এই কারণে এটিকে “উচ্চ ঝুঁকির অ্যাপ” (high risk app) হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

মোবাইল ও ডেস্কটপ থেকেও সরাতে হবে হোয়াটসঅ্যাপ
সিএও নির্দেশ দিয়েছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ শুধু মোবাইল থেকে নয়, বরং ডেস্কটপ এবং ওয়েব ব্রাউজার (web browsers) থেকেও পুরোপুরি সরাতে হবে। এও বলা হয়েছে যে, যেসব ডিভাইসে হোয়াটসঅ্যাপ পাওয়া যাবে, সেগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তা সরিয়ে দেওয়া হবে। এর বিকল্প হিসেবে কর্মীদের সিগনাল (Signal), মাইক্রোসফট টিমস (Microsoft Teams), উইকার (Wickr), অ্যাপলের (Apple) আইমেসেজ (iMessage) এবং ফেসটাইমের (FaceTime) মতো সুরক্ষিত অ্যাপ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে তাদের অজানা নম্বর থেকে আসা মেসেজ এবং ফিশিং অ্যাটাক (phishing attacks) থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তবে, হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটা (Meta) এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে। মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন (Andy Stone) বলেছেন যে, হোয়াটসঅ্যাপে ডিফল্টভাবে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন (end-to-end encryption) থাকে, যার ফলে মেসেজ শুধুমাত্র প্রেরক এবং প্রাপকই পড়তে পারে, হোয়াটসঅ্যাপ নিজে নয়। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, সিএও-এর অনুমোদিত অ্যাপগুলোর তালিকার বেশিরভাগেই এই নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নেই। মেটা আশা প্রকাশ করেছে যে, ভবিষ্যতে মার্কিন সংসদের সদস্যরা আবারও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন, যেমনটা সিনেটে (Senate) হচ্ছে।

ইরানও সরানোর নির্দেশ দিয়েছে
উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছিল যে, ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার কো ম্পা নি ‘প্যারাগন সলিউশনস’ (Paragon Solutions) হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অনেক সাংবাদিক এবং নাগরিক অধিকার কর্মীকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল। এর ফলে অ্যাপের নিরাপত্তা নিয়ে আগে থেকেই প্রশ্ন উঠছিল।

এছাড়াও, সম্প্রতি ইরানও তার নাগরিকদের হোয়াটসঅ্যাপ ডিলিট করার পরামর্শ দিয়েছিল। অভিযোগ ছিল যে, অ্যাপের মাধ্যমে লোকেশনের (location) মতো সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস হচ্ছে, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে পৌঁছাতে পারে। তবে, মেটা এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছিল।

এইভাবে, এখন আমেরিকা এবং ইরান উভয়ই হোয়াটসঅ্যাপকে নিরাপত্তার দিক থেকে সন্দেহজনক মনে করে নিজেদের স্তরে পদক্ষেপ নিয়েছে, যার ফলে আবারও অ্যাপটির গোপনীয়তা নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *