ইরান ও ইসরায়েলকে ছাড়ুন, নতুন যুদ্ধের ধোঁয়া উঠছে অন্য কোথাও!

ইরান ও ইসরায়েলকে ছাড়ুন, নতুন যুদ্ধের ধোঁয়া উঠছে অন্য কোথাও!

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে শিরোনাম হয়েছিল। এই সময়ে আমেরিকা বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান (B-2 stealth bombers) দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। কিন্তু আসল বিপদ হয়তো সেখানে নয়, বরং অন্য কোথাও দানা বাঁধছে।

একটি দেশ, যা ইতিমধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত, এবং এখন এই হামলাকে তার কৌশল জোরদার করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এই দেশটি হলো উত্তর কোরিয়া (North Korea)। স্বৈরশাসক কিম জং উনের (Kim Jong Un) সাম্রাজ্য, যা এখন আরও সতর্ক হয়ে উঠেছে।

কিম জং উন ইতিমধ্যেই বিশ্বাস করেন যে, পারমাণবিক অস্ত্রই তার ক্ষমতার গ্যারান্টি। আর এখন যখন আমেরিকা এমন একটি দেশের উপর হামলা চালিয়েছে, যা এখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারেনি, তখন এটি উত্তর কোরিয়ার জন্য একটি সরাসরি বার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, অস্ত্রহীন থাকা বিপদ থেকে মুক্ত নয়।

রাশিয়া-কোরিয়া – বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায়
ইরানের উপর মার্কিন হামলার পর উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার (Russia) ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্ব আরও জোরদার হতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের (Ukraine war) সময় পিয়ংইয়ং (Pyongyang) রাশিয়াকে অস্ত্র ও সৈন্য পাঠিয়েছিল, এবং এর বিনিময়ে রাশিয়া তাকে আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি থেকে শুরু করে তেল পর্যন্ত দিয়েছে। এখন এই সম্পর্কটি কেবল ব্যবসা নয়, বরং কৌশলগত অংশীদারিত্বে (strategic partnership) পরিণত হচ্ছে। অস্ত্রের যৌথ উন্নয়ন, সামরিক মহড়া এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর – এই সব আগামী মাসগুলোতে দ্রুত বাড়তে পারে।

সিউল এবং ওয়াশিংটনের টেনশন বাড়ল
উত্তর কোরিয়ার কাছে এখন ৪০ থেকে ৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়, এবং ICBM-এর (Intercontinental Ballistic Missile) মতো ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা আমেরিকা পর্যন্ত আঘাত হানতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকার পক্ষে এখন উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপের কথা কল্পনা করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ইরানের তুলনায় উত্তর কোরিয়া বেশি বিপজ্জনক। তার কাছে অস্ত্র আছে, সক্ষমতা আছে এবং এখন রাশিয়ার মতো শক্তিশালী অংশীদারও আছে।

আমেরিকার ইরান হামলা হয়তো একটি বার্তা ছিল, কিন্তু উত্তর কোরিয়া এটিকে আরও একটি কারণ হিসেবে দেখতে পারে। আর সেই কারণটি হলো তার পারমাণবিক কর্মসূচিকে ত্বরান্বিত করা। সুতরাং মূল কথা হলো, এই হামলা কিম জং উনকে ভয় দেখায়নি, বরং সম্ভবত তাকে আরও বিশ্বাস করিয়েছে যে, যাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই, তারাই লক্ষ্যবস্তু হয়। আর এই চিন্তাভাবনাই আগামী দিনে বিশ্বকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *