ঋণের বোঝায় জর্জরিত পাকিস্তান, ৭৬,০০০ বিলিয়ন পিকেআর বোঝা সত্ত্বেও আবারও পেল বিপুল ঋণ!

দেউলিয়া হওয়ার দোরগোড়ায় এসে পৌঁছানো পাকিস্তানের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে এখন তাকে প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানকে আরও একবার বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণের ‘উপহার’ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক (World Bank) এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB) যৌথভাবে পাকিস্তানকে মোট ৫৪.৪ কোটি ডলার (544 million USD) অনুমোদন করেছে। এই তহবিল শিক্ষা এবং নারী ক্ষমতায়নের মতো বিষয়গুলোর নামে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক ১৯.৪ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে, যা পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে জল ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য ব্যবহার করা হবে। অন্যদিকে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ৩৫ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে, যা মহিলাদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
শিশুশিক্ষা থেকে জল পর্যন্ত, সবই ঋণের উপর নির্ভরশীল
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঋণ দুটি প্রকল্পের অধীনে পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়েছে যে, এর ফলে বেলুচিস্তানের যেসব শিশু এখনও স্কুল থেকে বঞ্চিত, তারা শিক্ষা লাভ করবে এবং জলসংকট মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ব ব্যাংকের পাকিস্তান প্রতিনিধি নেজি বেহসিন বলেছেন যে এই প্রকল্প জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে লড়াই করা বেলুচিস্তানকে সাহায্য করবে এবং স্থানীয় যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে।
রেডিও পাকিস্তানের রিপোর্ট অনুসারে, এডিবি-র সঙ্গে করা চুক্তি WFI (Women’s Financial Inclusion) কর্মসূচির অধীনে হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে দাবি করা হয়েছে যে মহিলারা ব্যাংকিং পরিষেবাগুলোতে আরও ভালো অ্যাক্সেস পাবেন, তাদের স্বরোজগার এবং উদ্যোক্তা হওয়ার নতুন সুযোগ তৈরি হবে এবং কর্মস্থলে লিঙ্গ সমতাকে উৎসাহিত করা হবে।
চুক্তিটিতে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাবিনা কুরেশি এবং প্রকল্প প্রশাসন ইউনিটের প্রধান দীনেশ রাজ শিবকোটি স্বাক্ষর করেছেন। সরকারের দাবি যে এই কর্মসূচি মহিলাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অংশীদার করবে, যদিও বাস্তব চিত্র ভিন্ন কথা বলছে।
ঋণের গভীরে ডুবছে অর্থনীতি, জিডিপি কমে ২.৭% এ সীমাবদ্ধ
পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ৯ জুন প্রকাশিত আর্থিক সমীক্ষা ২০২৪-২৫ অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরে দেশের মোট ঋণ বেড়ে ৭৬ হাজার বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপিতে (প্রায় ৭৬ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি) পৌঁছেছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার মাত্র ২.৭ শতাংশ অনুমান করা হয়েছে, যা নির্দেশ করে যে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে।