ভারতের এই জঙ্গলে ৯০ বছর পর দেখা গেল এই রহস্যময় প্রাণী, প্রথমবারের মতো ক্যামেরায় ধরা পড়লো

ভারতের এই জঙ্গলে ৯০ বছর পর দেখা গেল এই রহস্যময় প্রাণী, প্রথমবারের মতো ক্যামেরায় ধরা পড়লো

মহারাষ্ট্রের সহ্যাদ্রি টাইগার রিজার্ভে সম্প্রতি একটি অত্যন্ত বিরল এবং চমকপ্রদ দৃশ্য দেখা গেছে। এখানে জঙ্গলের বাফার জোনে ঘুরতে আসা এক পর্যটক একটি কালো বুনো কুকুর (melanistic dhole) দেখতে পান, যা তিনি তার ক্যামেরায় রেকর্ড করেন। জানা যাচ্ছে যে, ভারতে এই ধরনের কালো ঢোল প্রায় ৯০ বছর পর প্রথমবারের মতো দেখা গেল।

এই আবিষ্কার কিভাবে হলো?
এই অনন্য প্রাণীটি দিগ্বিজয় পাতিল নামের একজন প্রকৃতিপ্রেমী দেখতে পান, যিনি সহ্যাদ্রি টাইগার রিজার্ভে বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি দ্রুত এই কালো ঢোলের ছবি এবং ভিডিও তোলেন এবং এর তথ্য মাননীয় বন্যপ্রাণী ওয়ার্ডেন রোহান ভাটের কাছে জানান। এরপর বন বিভাগ নিশ্চিত করে যে এটি সত্যিই একটি মেলানিস্টিক ঢোল। এখন কর্মকর্তারা সেখানে ক্যামেরা লাগিয়ে এই অঞ্চলের উপর নজর রাখছেন যাতে ভবিষ্যতে এর আরও দেখা মেলে।

এক্স (পূর্বে টুইটার) এ একজন ব্যবহারকারী কর্তৃক শেয়ার করা এই বিরল কালো ঢোলের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এর আগে ভারতে মেলানিস্টিক ঢোলকে শেষবার ১৯৩৬ সালে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের কাছে দেখা গিয়েছিল, যা ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ আর সি মরিস লিপিবদ্ধ করেছিলেন।

ঢোল কি?
ঢোল বা এশিয়াটিক ওয়াইল্ড ডগ সাধারণ কুকুরের থেকে অনেক আলাদা হয়। এদের শরীর নেকড়ে এবং শেয়ালের মতো হয়, কিন্তু এদের পিঠ লম্বা এবং পা পাতলা হয়, যেমন বিড়ালের। এরা সাধারণ কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে না বা নেকড়ের মতো ডাকে না, বরং এরা বাঁশির মতো আওয়াজ করে, তাই এদের বাঁশি বাজানো কুকুর (whistling dogs)-ও বলা হয়।

এই প্রাণীগুলো দলবদ্ধভাবে থাকে এবং শিকার করে। একটি দলে সাধারণত ৫ থেকে ১২ সদস্য থাকে, তবে কিছু এলাকায় এদের সংখ্যা ১৫-২০ পর্যন্তও হতে পারে। এরা সাম্বার, বুনো শুয়োর, গৌর, ছাগল এবং কখনো কখনো জল মহিষের মতো প্রাণী শিকার করে। তবে এরা শিকারের ক্ষেত্রে বাঘ এবং চিতাবাঘের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলে।

ঢোল কালো হয় কেন?
সাধারণত ঢোলের রঙ লাল-বাদামী হয়, কিন্তু যখন এদের শরীরে মেলানিন নামক রঞ্জক পদার্থের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়, তখন এদের রঙ পুরোপুরি কালো হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থাকে মেলানিজম বলে। এটি একটি বংশগত অবস্থা। মেলানিজম চিতাবাঘ, কাঠবিড়ালি-র মতো কিছু অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও দেখা গেছে, কিন্তু ঢোলের ক্ষেত্রে এটি খুবই বিরল। এই কারণেই এই ঘটনাটি বিশেষ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *