ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর চাঞ্চল্যকর মন্তব্য, ‘সুযোগ পেলে খামেনেইকেও মেরে ফেলতাম’

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর চাঞ্চল্যকর মন্তব্য, ‘সুযোগ পেলে খামেনেইকেও মেরে ফেলতাম’

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ শেষ হলেও, কথার যুদ্ধ এখন আরও তীব্র হয়েছে। উভয় দেশের পক্ষ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র এবং আক্রমণাত্মক মন্তব্য ক্রমাগত সামনে আসছে।

এই পুরো ঘটনার মধ্যে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ-এর একটি বড় এবং চাঞ্চল্যকর মন্তব্য সামনে এসেছে। তিনি সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, যদি তারা সঠিক সুযোগ পেতেন, তাহলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইকেও শেষ করে দিতেন।

“আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু সুযোগ পাইনি” – কাৎজ
দ্য ইসরায়েল টাইমস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কাৎজ ইসরায়েলি চ্যানেল ১৩-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেছেন যে, ইসরায়েল খামেনেইকে নির্মূল করার অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা সেই সুযোগ কখনোই পাননি। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ইসরায়েলের নীতি একেবারেই স্পষ্ট – যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আকাশপথে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা জরুরি, যাতে তারা আবার পারমাণবিক অস্ত্র বা ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কাজ শুরু করতে না পারে।

তিনি বলেন, “যদি খামেনেই আমাদের নাগালের মধ্যে থাকত, তাহলে তাকেও মেরে ফেলা হত। কিন্তু যখন সে নিজেকে একটি বাঙ্কারে লুকিয়ে রাখল এবং তার কমান্ডারদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল, তখন তাকে ট্র্যাক করা কঠিন হয়ে পড়ে।”

আমেরিকার অনুমতি নেওয়া হয়নি – কাৎজ-এর স্পষ্ট উত্তর
যখন সাক্ষাৎকারে কাৎজকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এই সম্ভাব্য অপারেশনের জন্য আমেরিকার অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কিনা, তখন তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “এমন ক্ষেত্রে আমাদের কারো অনুমতির প্রয়োজন হয় না।” অর্থাৎ, ইসরায়েল তার কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলিতে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়।

খামেনেইয়ের পাল্টা আক্রমণ – “ইরান আমেরিকাকে চড় মেরেছে”
অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই বৃহস্পতিবার তার প্রথম জনসমক্ষে দেওয়া বিবৃতিতে আমেরিকা এবং ইসরায়েলকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। তিনি ইরানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাওয়া “বিজয়ের” দাবি করে বলেছেন যে, “আমরা আমেরিকার মুখে চড় মেরেছি।”

ইরানের সরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও বার্তায় খামেনেই বলেছেন যে, যদি আমেরিকা হস্তক্ষেপ না করত, তাহলে ইসরায়েলি শাসনের অবসান নিশ্চিত ছিল। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, এই যুদ্ধ থেকে আমেরিকার কোনো লাভ হয়নি।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার উল্লেখ এবং ভবিষ্যতের সতর্কতা
খামেনেই তার ভাষণে কাতারে অবস্থিত আমেরিকান সামরিক ঘাঁটিতে হওয়া ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, “ইসলামিক প্রজাতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে এবং আমেরিকাকে শিক্ষা দিয়েছে।” তিনি একই সাথে সতর্ক করে দেন যে, ভবিষ্যতেও এমন পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

তিনি বলেন, “ইরানের নাগালের মধ্যে এই অঞ্চলের সমস্ত আমেরিকান ঘাঁটি রয়েছে, এবং প্রয়োজন হলে তারা আবারও হামলা করতে পারে। যদি শত্রু কোনো আক্রমণ করে, তাহলে তাকে এর জন্য বিশাল মূল্য দিতে হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *