চীন ভারতকে বিপদে ফেলার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করে না। গত দুই মাস ধরে চীন ভারতে বিশেষ সারের চালান আটকে রেখেছে। এর পাশাপাশি, চীন থেকে বিরল মৃত্তিকা খনিজ (Rare Earth Minerals) এবং সুড়ঙ্গ খননের যন্ত্রও ভারতে আসতে পারছে না। চীনের বন্দরগুলোতে উচ্চমূল্যের সার আটকে আছে, যা ফল, সবজি এবং উদ্যানজাত ফসলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত তার বিশেষ সারের প্রায় ৮০ শতাংশ চীন থেকে আমদানি করে, তাই চীনের এই পদক্ষেপ ভারতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

ভারতের পাল্টা পদক্ষেপ
এর জবাবে ভারতও কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC) চীন এবং তাইওয়ান থেকে আসা প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রপাতির উপর পাঁচ বছরের জন্য অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে। CBIC এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। চীন থেকে আসা পার্লেসেন্ট পিগমেন্টের উপর ভারত ২০২ সালেই অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছিল। সরকারের এই পদক্ষেপ ভারতের ব্যবসায়ীদের সরাসরি উপকৃত করবে।

বিরল মৃত্তিকা খনিজ এবং সুড়ঙ্গ খনন যন্ত্রের অবরোধ
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যে চীন ভারতের কাছে বিরল মৃত্তিকা খনিজের সরবরাহও আটকে রেখেছে। বিরল মৃত্তিকা খনিজ বৈদ্যুতিক যান, টারবাইন এবং ইলেকট্রনিক্সের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় নির্মাতারা সতর্ক করেছে যে, যদি সরবরাহ দ্রুত শুরু না হয় তবে উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। এছাড়া, জার্মান সংস্থা হেরেনকনেক্ট দ্বারা চীনে নির্মিত মুম্বাই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য টানেল বোরিং মেশিন (TBM) গুলিও চীনা বন্দরগুলিতে আটকে রয়েছে। অর্থ প্রদান করা সত্ত্বেও, যন্ত্রগুলির রপ্তানি অনুমোদন মেলেনি।

ভারতের জন্য তাইওয়ানের সুখবর
তাইওয়ানের বিশাল কো ম্পা নি হন হাই প্রিসিশন ইন্ডাস্ট্রি কো ম্পা নি লিমিটেড (ফক্সকন) তাইওয়ান সরকারের কাছ থেকে ভারত এবং আমেরিকায় ২.২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে। এমন সময়ে ফক্সকন এই অনুমোদন পেল, যখন তারা চীনের বাইরে তাদের সাপ্লাই চেইন দ্রুত প্রসারিত করছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং পিএলআই (PLI) এর মতো উদ্যোগগুলি বিপুল সংখ্যক বিদেশি ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকারী সংস্থাকে আকৃষ্ট করতে সফল হয়েছে এবং এর ফলে দেশে দ্রুত উৎপাদন বেড়েছে ও কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হয়েছে।