আমেরিকার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইরানের জেদ, সামনে এল ইসরায়েলকে উসকে দেওয়া ছবি

২১-২২শে জুন রাতে আমেরিকা ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা—ফোর্দো, নাতানজ এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছিল। ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’-এর অধীনে বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলা হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল এই গোপন পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা।
কিন্তু আমেরিকার কঠোর বার্তা এবং বোমাবর্ষণের পরেও ইরান পিছু হটতে রাজি নয়।
আসলে, ম্যাক্সার টেকনোলজিস (Maxar Technologies)-এর নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে ইরান আবার পারমাণবিক কেন্দ্রে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। ছবি অনুযায়ী, ফোর্দো সাইটে আবার নির্মাণ ও খনন কাজ দেখা যাচ্ছে। সুড়ঙ্গের কাছাকাছি বুলডোজার, ট্রাক এবং অন্যান্য ভারী যন্ত্রপাতি কাজ করছে।
ইরান কি সাইটটি পুনরায় তৈরি করছে?
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, হামলার আগেই ইরান ফোর্দো সাইটটি খালি করে ফেলেছিল এবং সংবেদনশীল উপাদানগুলি কোনো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছিল। কিছু সুড়ঙ্গ ইচ্ছাকৃতভাবে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছিল যাতে সেগুলিকে বোমাবর্ষণ থেকে রক্ষা করা যায়। নতুন ছবিতে তাজা মাটি, সুড়ঙ্গের উপরে নতুন স্তর এবং নতুন রাস্তা স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এতে প্রশ্ন উঠছে যে ইরান কি এই সাইটটি গোপন করার চেষ্টা করছে নাকি এটিকে পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আমেরিকা এবং IAEA-এর প্রতিক্রিয়া
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে ফোর্দো-তে ৬০% পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ছিল, কিন্তু হামলার সময় সেটি সেখানে ছিল কিনা, তা নিশ্চিত নয়। অন্যদিকে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ দাবি করেছেন যে তাদের হামলা নির্ভুল ছিল এবং তারা সাইটের ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়েছেন। IAEA (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা)-ও বিবৃতি জারি করে বলেছে যে ফোর্দো-র সেন্ট্রিফিউজগুলি বর্তমানে কার্যকর নেই।
তবে, সংস্থাটি এও জানিয়েছে যে পরিস্থিতির প্রকৃত তথ্য কেবল ঘটনাস্থল পরিদর্শন বা নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে পাওয়া যাবে। একই সময়ে, ইরানি মিডিয়া এবং সংসদ সদস্যরা ক্রমাগত ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে পাল্টা হামলা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান হয় তার পারমাণবিক সক্ষমতা পুনরায় গড়ে তুলছে, অথবা বিশ্বের নজর থেকে তা গোপন করার কৌশল নিয়ে কাজ করছে।