‘১ কোটি টাকা না দিলে দুই ছেলের লাশ পাবে.’ কৃষককে ফোনে হুমকি, পুলিশের কাছে আর্জি

‘১ কোটি টাকা না দিলে দুই ছেলের লাশ পাবে.’ কৃষককে ফোনে হুমকি, পুলিশের কাছে আর্জি

উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে এক কৃষক পরিবার বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আসলে, বাহেরির রায়নাদা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সুরেন্দ্র কুমার গাংওয়ারকে কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপে ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে।

শুধু তাই নয়, মুক্তিপণ না দিলে তার দুই ছেলেকে হত্যা করে সেই ভিডিও পাঠানোর হুমকিও দিয়েছে তারা। পুলিশ এই ঘটনায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। কৃষকের পরিবার এখন তাদের বাড়িতেও ভয়ে ভয়ে থাকছে।

কৃষক সুরেন্দ্র কুমার গাংওয়ারের প্রায় ১৭৫ বিঘা চাষের জমি আছে। তার দুই ছেলে দীপক এবং সুরজ। সুরেন্দ্র জানান, ২২ জুন দুপুর ১২:৪৫ মিনিটে তার মোবাইলে একটি অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে। কলকারী সরাসরি ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

যখন সুরেন্দ্র বিষয়টি গুরুত্ব দেননি, তখন হুমকিদাতা বলেন, যদি টাকা না দেওয়া হয়, তবে দুই ছেলেকে হত্যা করে তাদের ভিডিও পাঠানো হবে। প্রথমবার সুরেন্দ্র কলটিকে মজা বা জাল ভেবে উপেক্ষা করেন। তিনি নম্বরটি ব্লকও করে দেন।

দ্বিতীয় কলের পর গুলি, পরিবার আতঙ্কিত

কিন্তু ঘটনা এখানেই থামেনি। ২৫ জুন সকাল ১০:১০ মিনিটে আবারও সেই ব্যক্তি অন্য নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কল করে। এবার সে বলে, ‘তুমি আমাদের কথা হালকাভাবে নিয়েছ, এবার দেখে নিও।’ এরপর সে জানায়, ২৪ জুন রাতে তোমার বাড়ির বাইরে গুলি চালানো হয়েছে।

সুরেন্দ্র জানান, সত্যিই ২৪ জুন রাত ১:১০ মিনিটে তাদের বাড়ির বাইরে থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। প্রথমে পরিবারের সদস্যরা কিছুই বুঝতে পারেননি, কিন্তু পরে বাইরে গিয়ে দেখেন সেখানে কিছু গুলির খোল পড়ে আছে। এই সবকিছু দেখে পুরো পরিবার আতঙ্কে পড়ে যায়। এখন বাচ্চাদের বাইরে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন তারা।

পুলিশ তদন্তে নেমেছে, সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হচ্ছে

ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। সুরেন্দ্র কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অজ্ঞাত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় মামলা রুজু করেছে। পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে যাতে জানা যায় কে গুলি চালিয়েছে। গ্রামের লোকজনেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, শীঘ্রই অভিযুক্তদের ধরা হবে। পুলিশের দল বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত করছে।

পরিবারে আতঙ্ক, চাষাবাদেও প্রভাব

এই ঘটনার পর সুরেন্দ্রের পুরো পরিবার ভীষণভাবে আতঙ্কিত। তিনি বলেন, বাচ্চারা স্কুল-কলেজেও ভয়ে ভয়ে যাচ্ছে। সুরেন্দ্র নিজেও মাঠে যেতে ইতস্তত করছেন। গ্রামবাসীরা জানান, এমন ঘটনা আগে এখানে কখনো ঘটেনি। এখন গ্রামের লোকেরাও চিন্তিত যে কারা এমন কাজ করছে। পুলিশ আশাবাদী যে শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের সন্ধান মিলবে এবং কৃষক পরিবার স্বস্তি পাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *