পুরুষদের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা যা কেউ জানে না: পুরুষরা গোপনে কীসের মুখোমুখি হন তা খুঁজে বের করুন!

পুরুষরা কেন তাদের সমস্যা লুকিয়ে রাখেন?
বেশিরভাগ পুরুষ তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলেন না। তারা মনে করেন তাদের সর্বদা শক্তিশালী দেখতে হবে। সমাজ ছেলেদেরকে কঠোর হতে এবং কাঁদতে না শেখায়।
এ কারণে অনেক পুরুষ নীরবে থাকেন, এমনকি যখন তারা ভেতরে কষ্ট পান।
কাজে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা
পুরুষরা প্রায়শই কর্মক্ষেত্রে বড় চাপ অনুভব করেন। তারা সময়সীমা, পদোন্নতি এবং অর্থ নিয়ে চিন্তিত থাকেন। অনেক পুরুষ অতিরিক্ত সময় কাজ করেন। তারা খুব কমই বিরতি নেন। এতে তারা ক্লান্ত এবং চাপগ্রস্ত হতে পারেন। কিছু পুরুষ অফিসের সমস্যা নিয়ে ভেবে ঘুমও হারান।
যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা তারা উপেক্ষা করেন
পুরুষরা স্বাস্থ্যের লক্ষণগুলো উপেক্ষা করেন। অনেক পুরুষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান না। তারা মনে করেন তারা শক্তিশালী এবং সুস্থ। কিন্তু পুরুষরাও হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হন। খুব অসুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজ চালিয়ে যান।
মানসিক স্বাস্থ্যের লড়াই
মানসিক স্বাস্থ্য একটি বড় লুকানো সমস্যা। অনেক পুরুষ একাকী বা বিষণ্ণ বোধ করেন। তারা দুঃখ বোধ করেন কিন্তু তা ভাগ করে নেন না। তারা ভয় পান যে লোকেরা তাদের বিচার করবে। অনেক পুরুষ অন্যের সামনে কাঁদেন না। তারা মনে করেন এতে তাদের দুর্বল দেখাবে।
চুল পড়া এবং চেহারা
চুল পড়া বেশিরভাগ পুরুষকে চিন্তিত করে। অনেক পুরুষের ২০ বা ৩০-এর দশকে চুল পড়তে শুরু করে। এটি তাদের আত্মবিশ্বাসকে প্রভাবিত করে। তারা টাক পড়া নিয়ে লজ্জিত বোধ করেন। কেউ কেউ চুলের চিকিৎসার জন্য অনেক খরচ করেন। কেউ কেউ ঘরোয়া প্রতিকারও চেষ্টা করেন।
অর্থের দুশ্চিন্তা
টাকার চাপ বাস্তব। অনেক পুরুষ মনে করেন তাদের পরিবারের জন্য উপার্জন করতেই হবে। যদি তারা চাকরি হারান বা কম বেতন পান, তাহলে তারা লজ্জিত বোধ করেন। এই দুশ্চিন্তা তাদের রাতে জাগিয়ে রাখে। অনেক পুরুষ ঋণ নেন এবং পরিবারের কাছে লুকিয়ে রাখেন।
সম্পর্কের সমস্যা
পুরুষরাও সঙ্গীর সঙ্গে সমস্যার মুখোমুখি হন। তারা মনে করেন তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সর্বদা শক্তিশালী থাকতে হবে। কিছু পুরুষের পক্ষে তাদের অনুভূতি নিয়ে কথা বলা কঠিন। এতে ঝগড়া বা দূরত্ব তৈরি হয়। সম্পর্ক ভেঙে গেলে অনেক পুরুষ তাদের দুঃখ লুকিয়ে রাখেন।
একাকীত্ব নিয়ে কেউ কথা বলে না
একাকীত্ব সাধারণ কিন্তু গোপন। অনেক পুরুষের ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকে না। বিয়ে বা সন্তান হওয়ার পর তারা পুরানো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেন। তারা দীর্ঘ সময় কাজ করেন। তাদের সামাজিক জীবনের জন্য কম সময় থাকে। তারা একা বোধ করেন কিন্তু কাউকে বলেন না।
শরীরের গড়ন নিয়ে দুশ্চিন্তা
শুধুমাত্র নারীরাই নয়, পুরুষরাও শরীরের গড়ন নিয়ে চিন্তিত। অনেক পুরুষ মনে করেন তারা খুব পাতলা বা মোটা। তারা সিনেমার তারকাদের মতো সিক্স-প্যাক অ্যাবস চান। তারা এ বিষয়ে কথা বলতে লজ্জিত বোধ করেন। তারা সর্বদা ফিট দেখতে চাপ অনুভব করেন।
আসক্তির সমস্যা
কিছু পুরুষ চাপ লুকাতে মদ্যপান বা ধূমপান করেন। অনেক পুরুষ মজার জন্য মদ্যপান শুরু করেন কিন্তু পরে আসক্ত হয়ে পড়েন। ভয় বা লজ্জার কারণে তারা সাহায্য চান না। এই আসক্তি নীরবে স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক জীবন নষ্ট করে।
ব্যর্থতার ভয়
পুরুষরা জীবনে হেরে যাওয়ার ভয় পান। তারা কাজ, ব্যবসা বা পড়াশোনায় ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে চিন্তিত থাকেন। এই ভয় তাদের ঝুঁকি নিতে বাধা দেয়। অনেক পুরুষ ব্যর্থ হলে অন্যদের বলেন না। তারা তা ভেতরে রাখেন এবং একা দুঃখ বোধ করেন।
আবেগিক সমর্থনের অভাব
বেশিরভাগ পুরুষ আলিঙ্গন বা আবেগিক সমর্থন পান না। তারা মনে করেন তাদের কথা বলার মতো কেউ নেই। এমনকি বাড়িতেও, অনেক পুরুষ একা বোধ করেন। তারা চান যে তারা সমস্যাগুলো ভাগ করে নিতে পারতেন কিন্তু নীরব থাকেন।
পুরুষরা কীভাবে এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারেন?
কথা বলা সাহায্য করে। পুরুষদের বন্ধু বা পরিবারের কাছে মন খুলে কথা বলা উচিত। স্বাস্থ্য বা চাপের জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া ঠিক আছে। তাদের কাজ থেকে বিরতি নেওয়া উচিত। একটি শখ মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে। অনুভূতি ভাগ করে নেওয়া জীবনকে হালকা করে তোলে।
পারিবারিক সমর্থন জরুরি
পরিবারেরও পুরুষদের সমর্থন করা উচিত। তাদের দুশ্চিন্তা শুনুন। তারা কাঁদলে হাসবেন না। তাদের বিশ্রাম করার জন্য জায়গা দিন। তাদের মনে করিয়ে দিন যে সাহায্য চাওয়া ঠিক আছে।
আধুনিক পুরুষরা নীরবতা ভাঙছেন
আজ, অনেক পুরুষ নীরবতা ভাঙছেন। কেউ কেউ খোলাখুলিভাবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলছেন। অনেক সেলিব্রিটি চাপ এবং দুঃখ নিয়ে কথা বলেন। এটি অন্য পুরুষদের কম একা বোধ করতে সাহায্য করে।
আপনার চারপাশের পুরুষদের প্রতি সদয় হন
যদি আপনি কোনো পুরুষকে ক্লান্ত বা চাপগ্রস্ত দেখেন, তবে জিজ্ঞাসা করুন তিনি ঠিক আছেন কিনা। সামান্য সমর্থন অনেক কিছু বোঝায়। একটি সহজ কথা একটি জীবন বাঁচাতে পারে।