জগন্নাথের এই অনন্য রথযাত্রার অংশ হতে লক্ষ লক্ষ ভক্ত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুরীতে আসেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে পুরী শুধুমাত্র ভগবান জগন্নাথের দর্শনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর আশেপাশে এমন অনেক জায়গা আছে যা আপনার ভ্রমণকে আরও সমৃদ্ধ ও স্মরণীয় করে তুলতে পারে।

আমরা আপনাকে পুরীর আশেপাশে ঘোরার জন্য সেরা পাঁচটি জায়গা সম্পর্কে জানাব, যা আপনি রথযাত্রার সময় বা তার পরেও ঘুরে দেখতে পারেন। এই জায়গাগুলি কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বেই পরিপূর্ণ নয়, বরং এগুলি আপনার পুরী ভ্রমণকে নিশ্চিত করবে যে এটি শুধুমাত্র একটি তীর্থযাত্রা না হয়ে একটি পরিপূর্ণ ভ্রমণের গন্তব্যে পরিণত হবে।

কোণার্কের সূর্য মন্দির

পুরী থেকে প্রায় ৩৫ কিমি দূরে অবস্থিত কোণার্কের সূর্য মন্দির ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত এবং দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা প্রতি বছর এটি দেখতে আসেন। এই মন্দিরটি ২৪টি বিশাল চাকা এবং সাতটি ঘোড়াযুক্ত সূর্যদেবের রথের আকারে নির্মিত হয়েছে, যা সূর্যের গতিবিধির প্রতীকী চিত্রণ করে। এর কারুকার্য, বিশালতা এবং স্থাপত্য যে কাউকে মুগ্ধ করতে পারে। যদি আপনি রথযাত্রার সময় পুরীতে আসেন, তাহলে অবশ্যই কোণার্ক ঘুরে দেখুন।

চিল্কা হ্রদ

পুরী থেকে প্রায় ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত চিল্কা হ্রদ হল ভারতের বৃহত্তম লবণাক্ত জলের হ্রদ এবং এটি পাখিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গের চেয়ে কম কিছু নয়। যদি আপনি প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে কিছু শান্ত এবং আরামদায়ক মুহূর্ত কাটাতে চান, তবে এখানে নৌকায় ভ্রমণ, ডলফিন দেখা এবং এখানকার সুন্দর দ্বীপগুলি পরিদর্শন করার অভিজ্ঞতা অবশ্যই নিন।

সাক্ষীগোপাল মন্দির

পুরী থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাক্ষীগোপাল মন্দির ধর্মীয় ইতিহাস এবং একটি প্রেমকাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। বলা হয় যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এখানে একটি প্রেমিক জুটির বিয়ের সাক্ষী হয়েছিলেন। মন্দিরের সৌন্দর্য এবং এর পেছনের গল্প এটিকে একটি বিশেষ অভিজ্ঞতায় পরিণত করে।

রামচণ্ডী সমুদ্র সৈকত

কোণার্কের পথে আসা রামচণ্ডী সমুদ্র সৈকত এমন মানুষদের জন্য, যারা ভিড় থেকে দূরে প্রকৃতির কোলে কিছু সময় কাটাতে চান। সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ, শান্ত পরিবেশ এবং সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের দৃশ্য আপনাকে এক ভিন্ন শান্তি দেবে। রথযাত্রার ভিড় এবং উদ্দীপনার পর, নিজের সাথে কিছু সময় কাটানোর জন্য এটি একটি উপযুক্ত জায়গা।

নরেন্দ্র পোখরি

পুরী শহরের মধ্যে অবস্থিত নরেন্দ্র পোখরি একটি বিশাল এবং শান্ত জলাশয়, যেখানে ভগবান জগন্নাথের ‘চন্দন যাত্রা’ এবং ‘জলবিহার’ উৎসব উদযাপন করা হয়। এখানকার ঘাটে বসে আপনি আধ্যাত্মিক শান্তির অভিজ্ঞতা নিতে পারেন। রথযাত্রার জন্য আসা ভক্তদের জন্য, এই জায়গাটি তাদের সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয় যখন ভগবান স্বয়ং জলে স্নান করেন এবং ভক্তদের দর্শন দেন।