ইউপি নয়, একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে জাল নোটের কারবারিরা, মাস্টারমাইন্ডের গ্রেফতারিতে ফাঁস হল বহু রহস্য

কেশব ত্যাগী, হাপুড়। ৩.৯০ লক্ষ টাকার জাল নোট সহ আন্তঃরাজ্য চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতারের পর এটিএস তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার তাদের সঙ্গী আনাস আহমেদকে সীতাপুর জেলা থেকে ১.০৫ লক্ষ জাল নোট সহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই চক্রের মূল পান্ডা গজেন্দ্র জাল নোটগুলো আনাসকে বাজারে চালানোর জন্য দিয়েছিল। জাল নোটের কারবারিরা শুধু বুলন্দশহর, হাপুড়, সীতাপুরেই নয়, একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। এটিএস এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও বেশ কয়েকজন সদস্যকে দ্রুত গ্রেফতার করতে পারে।
এটিএস-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, হাপুড়ের পিলখুয়া থেকে রেলওয়ের পয়েন্ট ম্যান বুলন্দশহর জেলার জীবন গীত গজৌরীর গজেন্দ্র যাদব, সলেমপুর থানার রসুলপুর গ্রামের বিজয় বীর চৌধুরী এবং নয়াদিল্লির গাজিপুরের জি-২১৪ এর সিদ্ধার্থ ঝাকে জাল নোট সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গজেন্দ্র যাদব আনাসকে বাজারে চালানোর জন্য ১.০৫ লক্ষ টাকার জাল নোট দিয়েছিল। এরপর শনিবার দলটি সীতাপুর জেলার সিধৌলির গান্ধীনগরের আনাস আহমেদকে জাল নোট সহ গ্রেফতার করে। চক্রের সদস্যরা ছোট দোকানদার, ঠেলাওয়ালা এবং বাজারে জাল নোট চালানোয় অত্যন্ত দক্ষ ছিল।
এই জাল নোটগুলো এতটাই নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে সাধারণ দোকানদাররা সহজে সেগুলোকে আসল বলে মনে করত। গজেন্দ্র যাদব ছিল জাল নোট সরবরাহের প্রধান উৎস, এবং সে তার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই নোটগুলো চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিত। এই চক্রের তার অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারে, যার জন্য এটিএস এখন নিবিড় তদন্ত চালাচ্ছে।
ছোট দোকানদাররাই ছিল প্রধান শিকার
ছোট দোকানদার এবং ঠেলাওয়ালারা, যারা সাধারণত নগদ টাকায় লেনদেন করে, তারাই ছিল এই চক্রের প্রধান শিকার। জাল নোটের প্রচলনে শুধু ব্যবসায়ীদেরই আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল না, বরং এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার সংকটও তৈরি করছিল। এটিএস-এর মতে, চক্রের সদস্যরা ছোট ছোট লেনদেনে এই জাল নোটগুলো চালিয়ে সহজেই পার পেয়ে যেত। গজেন্দ্র যাদবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, এটিএস এখন উত্তর প্রদেশের অন্যান্য রাজ্যে সক্রিয় এই চক্রের বাকি সদস্যদের খুঁজছে। পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
জেলা পুলিশও তথ্য সংগ্রহ করছে
গজেন্দ্র পিলখুয়ার দীনেশ নগরে ভাড়া বাড়িতে থাকত। তার গ্রেফতারির পর জেলা পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাও সক্রিয় হয়েছে। রেলওয়ের আধিকারিক ও কর্মচারীরাও গজেন্দ্র যাদবের গ্রেফতারিতে অবাক। রেল কর্মকর্তাদের বক্তব্য, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে গজেন্দ্রের স্ত্রী একজন শিক্ষিকা।