অষ্টম বেতন কমিশনে পেনশন নিয়মে বড় পরিবর্তন সম্ভব! কম্যুটেশন পুনরুদ্ধারের সময় ১৫ বছর থেকে কমে ১২ বছর?

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য একটি স্বস্তির খবর সামনে এসেছে। অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তাতে কম্যুটেশন পেনশনের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হতে পারে।
যদি এই পরিবর্তন কার্যকর হয়, তাহলে লক্ষ লক্ষ পেনশনভোগী তাদের পুরো পেনশন ৩ বছর আগেই পেতে শুরু করবেন।
কী এই বিষয়টি?
দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে যে কম্যুটেশন পেনশনের পুনরুদ্ধারের সময়কাল ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১২ বছর করা হোক। ন্যাশনাল কাউন্সিল (JCM) এখন এই দাবিটিকে তাদের আনুষ্ঠানিক স্মারকলিপিতে অন্তর্ভুক্ত করে সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এবং এটিকে অষ্টম বেতন কমিশনের টার্মস অফ রেফারেন্স (ToR)-এর অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
কম্যুটেশন পেনশন কী?
যখন কোনো সরকারি কর্মচারী অবসর নেন, তখন তাকে একটি বিকল্প দেওয়া হয় যে তিনি তার পেনশনের একটি অংশ একবারে (lump sum) নিতে পারেন। একেই ‘কম্যুটেশন অফ পেনশন’ বলা হয়।
উদাহরণ:
যদি কারও পেনশন ২০,০০০ টাকা হয় এবং তিনি ৫০% অর্থাৎ ১০,০০০ টাকা পেনশন একবারে তুলে নেন, তবে তিনি প্রতি মাসে কেবল ১০,০০০ টাকা পেনশন পান।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, এই কাটছাঁট ১৫ বছর পর্যন্ত চলে। এরপরই ব্যক্তি পুরো পেনশন পেতে শুরু করেন।
পেনশনভোগীরা কেন বিরোধিতা করছেন?
পেনশনভোগী ও কর্মচারী সংগঠনগুলোর মতে, ১৫ বছর একটি দীর্ঘ সময়।
মুদ্রাস্ফীতি ক্রমাগত বাড়ছে, এমন পরিস্থিতিতে ১৫ বছর পর্যন্ত পুরো পেনশন না পাওয়া অর্থনৈতিকভাবে অসংগত।
যদি এই সময়সীমা ১২ বছর করা হয়, তাহলে পেনশনভোগীরা ৩ বছর আগে থেকেই তাদের পুরো পেনশন পাওয়া শুরু করবেন, যা তাদের খরচ সামলাতে সাহায্য করবে।
JCM কী বলছে?
ন্যাশনাল কাউন্সিল JCM (Joint Consultative Machinery) ক্যাবিনেট সচিবকে যে দাবি সনদ দিয়েছে, তাতে এই বিষয়টি প্রধানত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। JCM মনে করে, সরকারের উচিত এটিকে অষ্টম বেতন কমিশনের রূপরেখার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা যায়।
বেতন কমিশনের সময়সীমা কী?
সপ্তম বেতন কমিশনের কার্যকাল ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫-এ শেষ হচ্ছে।
প্রতি ১০ বছরে একটি নতুন বেতন কমিশন আসে, তাই অষ্টম বেতন কমিশন ১ জানুয়ারি, ২০২৬ থেকে কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত কমিশনের সদস্য ঘোষণা করা হয়নি এবং এর ToR-ও নির্ধারিত হয়নি।
এই অবস্থায়, প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যদি পরিবর্তন হয়, তাহলে কী লাভ হবে?
পেনশনভোগীরা পুরো পেনশন ৩ বছর আগে থেকে পাবেন।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা উন্নত হবে।
এর ফলে অবসরের পরের জীবন কম চাপমুক্ত হতে পারে।
বিশেষ করে বয়স্ক ভোটারদের মধ্যে সরকারের জনপ্রিয়তাও বাড়তে পারে।
কম্যুটেশন পেনশনের পুনরুদ্ধারের সময়কাল নিয়ে ওঠা এই দাবি যদি অষ্টম বেতন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত হয়, তবে এটি লক্ষ লক্ষ পেনশনভোগীর জন্য একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। সরকার বর্তমানে এই বিষয়ে বিবেচনা করছে এবং খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে একটি স্পষ্ট নীতি সামনে আসতে পারে। পেনশনভোগীদের এই বিষয়ে জারি থাকা আপডেটের দিকে নজর রাখতে বলা হচ্ছে।