জানলে অবাক হবেন, কিন্তু এটাই সত্যি। আমেরিকার হাতেই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির জন্ম!

দুই দশক ধরে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই, যা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। ১৯৫০-এর দশকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট আইজেনহাওয়ারের ‘অ্যাটমস ফর পিস’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইরান পারমাণবিক প্রযুক্তি ও সহায়তা পায়। ১৯৫৭ সালে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র তেহরানকে একটি পারমাণবিক গবেষণা চুল্লি এবং সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরবরাহ করে। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে কৌশলগত মিত্র হিসেবে ইরানকে পাশে রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। ১৯৭০ সালে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও, শাহের মনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির আকাঙ্ক্ষা ছিল বলে জানা যায়।
তবে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। নতুন বিপ্লবী সরকার এই প্রকল্পকে ‘ব্যয়বহুল’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দেয়। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পারমাণবিক প্রযুক্তির কৌশলগত গুরুত্ব উপলব্ধি করে ইরান নিজস্ব গোপন কর্মসূচি শুরু করে। ২০০৩ সালে জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থা জানায়, তেহরান গোপনে প্রায় ১৮ বছর ধরে পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয়। এরপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যদিও ইরান সবসময় শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচি চালানোর দাবি করে আসছে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ‘অ্যাটমস ফর পিস’ উদ্যোগের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় অনেক দেশই পরে সামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে হেঁটেছে।