‘তুই কে আমায় বলার?’ হিন্দু বন্ধুর সঙ্গে দেখে মুসলিম তরুণী দাঙ্গাবাজকে প্রকাশ্যে পেটালেন, ভিডিও ভাইরাল হতেই দেশ স্তব্ধ!

উত্তরপ্রদেশে এক মুসলিম তরুণী তার হিন্দু বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার সময় অশালীন মন্তব্যকারী এক দাঙ্গাবাজ যুবককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে সাহস ও দৃঢ়তার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই ঘটনাটি সামনে আসে যখন অভিযুক্ত যুবক মুসলিম তরুণী ও তার বন্ধুর ভিডিও করতে শুরু করে এবং ‘জাতির অপমান’ করার মতো উস্কানিমূলক কথা বলতে থাকে। তরুণী প্রথমে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু সে না থামলে তিনি নির্ভয়ে তাকে চড় মারতে শুরু করেন। এই ঘটনার ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে, যা সারা দেশে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং তরুণীর এই পদক্ষেপের ব্যাপক প্রশংসা হচ্ছে।
ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, তরুণী অভিযুক্তকে ধমকে বলছেন, ‘তুই কে আমায় বলার যে আমি কার সঙ্গে ঘুরব? এটা আমার জীবন, আমার পছন্দ।’ এই সময়ে আরও কিছু লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে যুবকটিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে এবং তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, নারীর প্রতি অভদ্র আচরণ এবং প্রকাশ্যে আপত্তিকর আচরণের জন্য বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত যুবক আগেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন উস্কানিমূলক পোস্ট করত এবং ‘লাভ-জিহাদ’ এর নামে ঘৃণা ছড়াতে চেয়েছিল।
মুসলিম তরুণীর সাহসী পদক্ষেপ: দাঙ্গাবাজকে রাস্তায় দিলেন উচিত শিক্ষা
একবিংশ শতাব্দীতে যখন বিশ্ব দ্রুত এগিয়ে চলেছে, তখনও কিছু সংকীর্ণমনা মানুষ সামাজিক সম্প্রীতি ভাঙার চেষ্টা করে। কিন্তু সম্প্রতি এক মুসলিম তরুণীর নেওয়া সাহসী পদক্ষেপ সারা দেশে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এই ঘটনাটি কেবল সামাজিক সদ্ভাবের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা নয়, বরং এটি প্রমাণ করে যে নারীরা এখন কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে চুপ করে বসে থাকার পাত্রী নন।
ঘটনা কোথায় এবং কীভাবে ঘটল?
পুরো ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের একটি বড় শহরের বলে জানা গেছে, যেখানে একজন মুসলিম তরুণী তার ছোটবেলার হিন্দু বন্ধুর সাথে একটি ক্যাফেতে দেখা করার পর পার্কের দিকে ঘুরতে গিয়েছিলেন। দুজনেই আরামে কথা বলছিলেন, ঠিক তখনই এক দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির যুবক সেখানে এসে দুজনের প্রতি অশালীন মন্তব্য করতে শুরু করে। ওই যুবক, যে কিনা কাছেরই মহল্লার বাসিন্দা ছিল, চুপচাপ ভিডিও করতে শুরু করে এবং সেই সঙ্গে মুসলিম তরুণীকে ‘কওমের বেइज্জতি’ বলে গালি দিতে থাকে। মুসলিম তরুণী প্রথমে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু সে না মানলে সেই তরুণী সাহস দেখিয়ে তাকে প্রকাশ্যে চড় মারতে শুরু করেন।
দাঙ্গাবাজকে পেল ‘ঠাস ঠাস’ মার
ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মুসলিম তরুণী শুধু চড়ই মারছেন না, বরং অভিযুক্তকে ধমকে বলছেন—
‘তুই কে আমায় বলার যে আমি কার সঙ্গে ঘুরব? এটা আমার জীবন, আমার পছন্দ।’
এই ভিডিওটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে যে, যেই তরুণী মারতে শুরু করলেন, সেখানে আরও কিছু লোক জড়ো হয়ে যুবকটিকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
কী ছিল অভিযুক্তের উদ্দেশ্য?
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে, অভিযুক্ত যুবক আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুসলিম তরুণীদের এবং হিন্দু ছেলেদের বন্ধুত্ব নিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট করত। সে মুসলিম তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ভিডিও ভাইরাল করতে চেয়েছিল যাতে ‘লাভ-জিহাদ’ এর নামে ঘৃণা ছড়ানো যায়। কিন্তু এবার তার চাল উল্টো ফল দিল কারণ সামনে ছিল এক নির্ভীক মুসলিম তরুণী, যিনি ভয় না পেয়ে তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে, সব মেয়ে দুর্বল হয় না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থনের ঢল
এই ভিডিওটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হতেই লোকজন মুসলিম তরুণীর দারুণ প্রশংসা করেছেন। টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে #MuslimGirlHeroine ট্রেন্ড করতে শুরু করে।
मुस्लिम लड़की ने, एक दंगाई कूट दिया
— Shubhangi Pandit (@Babymishra_) June 29, 2025
लड़की अपने हिन्दू मित्र के साथ घूम रही थी, एक दंगाई आया और कोम के दंगाईयो को इकठ्ठा करने लगा, बिना इजाजत वीडीयो भी बना रहा था
तभी अचानक मुस्लिम लड़की ने दंगाई के रहपटे ही रहपटे जढ़ दिए pic.twitter.com/ByfnoTirVn
কিছু কট্টরপন্থীর নিন্দাও
যেখানে একদিকে বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম তরুণীর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন, वहीं কিছু কট্টরপন্থী এতে আপত্তি জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ‘মেয়েটির নিজের ধর্মের মর্যাদা খেয়াল রাখা উচিত ছিল।’ এর জবাবে একজন ব্যবহারকারী খুব সঠিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন—
‘মর্যাদা তখন ভাঙে যখন নারীরা চুপ থাকে, এই মেয়েটি মর্যাদার নতুন সংজ্ঞা।’
পুলিশের পদক্ষেপ
স্থানীয় পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে আটক করেছে এবং তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, নারীর প্রতি অভদ্র আচরণ এবং প্রকাশ্যে আপত্তিকর আচরণের জন্য বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, ‘ভিডিওতে দেখা যাওয়া মুসলিম তরুণীকেও নিরাপত্তা দেওয়া হবে কারণ তাকে হুমকির ফোন আসছে।’
সামাজিক বার্তা: সাহস জরুরি, ধর্ম নয়
এই ঘটনাটি কেবল একটি ব্যক্তিগত সাহসের গল্প নয়, বরং একটি সামাজিক সতর্কতাও বটে। আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যেখানে মুসলিম তরুণী এবং হিন্দু ছেলের বন্ধুত্বকেও সন্দেহের চোখে দেখা হয়। কিন্তু এই ঘটনাটি বুঝিয়ে দিয়েছে যে ঘৃণার পরাজয় নিশ্চিত, যদি ভালোবাসা এবং সাহস সঙ্গে থাকে। একজন মুসলিম তরুণীর দেখানো এই সাহস আগামী প্রজন্মের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। যখন কোনো মেয়ে তার অধিকার এবং সম্মানের জন্য আওয়াজ তোলে, তখন সমাজ বদলায়। এই ঘটনাটি প্রমাণ করে দিয়েছে যে ধর্ম বা জাতি নয়, বরং চিন্তাভাবনাই সমাজকে জোড়ে বা ভাঙে।”