কলকাতা গণধর্ষণ মামলায় মেডিকেল রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস, জানুন পুরো ঘটনা

কলকাতার এক স্বনামধন্য আইন কলেজের ২৪ বছর বয়সী ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় মেডিকেল রিপোর্ট সামনে এসেছে। এই রিপোর্টে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে। আজতক-এর হাতে থাকা এক্সক্লুসিভ মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর গলায় আঁচড়ের দাগ রয়েছে। বুকে এবং ভেতরের উরুতেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভুক্তভোগীকে যৌন ও মৌখিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ধর্ষণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এই মামলার তদন্তের সময় ফরেনসিক দল তিনটি সোয়াব নমুনা সংগ্রহ করেছে, যেখান থেকে ডিএনএ এবং অন্যান্য জৈব প্রমাণ সংগ্রহ করা হবে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ভুক্তভোগীর রক্তচাপ ১২০/৮২ এবং পালস রেট ৭২ ছিল। প্রেগন্যান্সি টেস্ট নেগেটিভ এসেছে এবং ১৮ জুন তার এলএমপি (LMP) রেকর্ড করা হয়েছিল। ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী, ২৫ জুন সন্ধ্যায় তাকে কলেজ ক্যাম্পাসের ‘ডি’ ব্লকের গার্ড রুমে ডাকা হয়। সেখানে তিনজন লোক আগে থেকেই উপস্থিত ছিল, যারা তাকে আটকে রেখেছিল।
তিন ঘণ্টা ধরে চলে পাশবিকতা
অভিযোগ উঠেছে যে, এরপর প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র ভুক্তভোগীর সঙ্গে গণধর্ষণ করে, যখন অন্য দুই ছেলে প্রমিত মুখার্জি এবং জায়েদ আহমেদ পুরো ঘটনাটি দেখতে থাকে। এই পুরো ঘটনাটি প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলে, যেখানে ভুক্তভোগীকে শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও নির্যাতন করা হয়। তাকে হুমকি দিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করা হয়। তাকে তার প্রেমিককে হত্যা করার এবং তার বাবা-মাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য বলা হয়েছিল। ভুক্তভোগী কোনোভাবে নিজেকে সামলে পরদিন থানায় পৌঁছায়।
পুলিশি তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে যা সামনে এসেছে, তা চমকপ্রপ্রদ। পুলিশের মতে, প্রধান অভিযুক্ত ভুক্তভোগীর কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি ইতিমধ্যেই সম্পর্কে ছিল এবং সে পরিষ্কারভাবে প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রত্যাখ্যান সেই ছেলেটি সহ্য করতে পারেনি। এরপর সে তার বন্ধুদের সাথে মিলে তাকে নিজের লালসার শিকার বানায়। এই ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে কলকাতা পুলিশ ৫ জন অফিসারের একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠন করেছে।
পাঁচ সদস্যের সিট (SIT) তদন্ত করছে
এসআইটি-কে এই মামলার প্রতিটি স্তর উন্মোচন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজন অভিযুক্ত ছাত্র এবং কলেজের একজন নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছে, যিনি সেই রাতে ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ এখন কল ডিটেইল রেকর্ড, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, ই-মেইল এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। এই মামলা নিয়ে রাজ্যে রাজনীতিও শুরু হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপির অনেক সংগঠন প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে।