গাজায় গণহত্যার অভিযোগের মধ্যেই নেতানিয়াহুর বিস্ময়কর প্রস্তাব, দুই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের সঙ্গে শান্তিচুক্তি চান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী!

গাজায় গণহত্যার অভিযোগের মধ্যেই নেতানিয়াহুর বিস্ময়কর প্রস্তাব, দুই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের সঙ্গে শান্তিচুক্তি চান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী!

গাজায় ইসরায়েলি হামলার জেরে যেখানে আন্তর্জাতিক মহলে গণহত্যার অভিযোগ উঠছে, সেখানেই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার একটি চমকপ্রদ বিবৃতি দিয়ে কূটনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ইসরায়েল তাদের দুই যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া এবং লেবাননের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার সাংবাদিকদের বলেছেন, “ইসরায়েল আব্রাহাম চুক্তির পরিধি বাড়াতে আগ্রহী। আমরা চাই লেবানন এবং সিরিয়ার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোও শান্তি ও স্বাভাবিকীকরণের এই চক্রে যোগ দিক।” এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সম্প্রতি ১২ দিনব্যাপী যুদ্ধের পর পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা চরমে। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন যে, “ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাওয়া জয় এখন শান্তি চুক্তিগুলোর পরিধি বাড়ানোর পথ খুলে দিচ্ছে।”

আব্রাহাম চুক্তি কী?
আব্রাহাম চুক্তি হলো একটি ঐতিহাসিক কূটনৈতিক উদ্যোগ, যা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকার মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর আওতায় ইসরায়েল এবং কিছু আরব দেশ যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো এবং সুদান পারস্পরিক শত্রুতা ভুলে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। এই চুক্তিটি তিনটি আব্রাহামিক ধর্মের সাধারণ পয়গম্বর “আব্রাহাম”-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে, যা ধর্মীয় ঐক্যের প্রতীক। এর উদ্দেশ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে ভারসাম্যপূর্ণ করা।

গাজায় মানবিক সংকট
অন্যদিকে, গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। ইসরায়েলি সরকার গাজায় তাদের জিম্মিদের ফেরত আনা এবং হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার জন্য চূড়ান্ত অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দক্ষিণ গাজায় হামাসের কোমর ভেঙে দেওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন উত্তর গাজায় তাদের মনোযোগ বাড়িয়েছে। উত্তর গাজার বাসিন্দাদের এলাকা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে সেখানে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শীঘ্রই সেখানে বড় আকারের অভিযান শুরু করতে পারে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৫৬ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, যাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে।

এখন কেন লেবানন ও সিরিয়া?
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে এবং সেখানে একটি নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে, লেবাননে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ সংগঠনের শক্তি দুর্বল হয়েছে, যা ইসরায়েলকে কূটনৈতিক আলোচনার সুযোগ দেখাচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *