নেতানিয়াহুর জন্য চরম দুঃসংবাদ! ইরানে ইসরায়েলের ‘গুপ্তধন’ উদ্ধার, এবার খামেনেইয়ের দল ব্যবহার করবে এই অস্ত্র?

১২ দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল ইরান থেকে তাদের ‘বড় গুপ্তধন’ ফেলে এসেছে। এটি কোনো প্রকৃত ধনসম্পদ নয়, বরং উচ্চমানের অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র উদ্ধৃত করে ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, কয়েকশো মিলিয়ন ডলার মূল্যের ড্রোন ইরানের হাতে এসেছে এবং ইরান এখন সেগুলোকে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করছে। এই ঘটনা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কপালে ভাঁজ ফেলেছে।
রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং কী? রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি বস্তুকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে প্রতিটি অংশের ওপর গবেষণা করা হয়। এর নকশা, উপাদান এবং কাঠামো কীভাবে তৈরি হয়েছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অধ্যয়ন করা হয়। ড্রোনগুলোর ক্ষেত্রে, ইলেকট্রনিক ডেটা সংগ্রহ করে এর ফার্মওয়্যার, রাডার এবং সেন্সর থেকে তথ্য নেওয়া হবে। এরপর বিজ্ঞানীরা এর প্রসেসর, মোটর, যোগাযোগ চিপস, ক্যামেরা এবং এয়ারফ্রেম উপাদান নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করবেন। পরবর্তীতে, CAD সফটওয়্যার ব্যবহার করে ড্রোনের একটি ডিজিটাল অনুলিপি তৈরি করা হবে এবং সিমুলেশনের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে। এর ফলে ইরান একই ধরনের বা আরও উন্নত ড্রোন তৈরি করতে পারবে, যা লাইসেন্সের প্রয়োজন ছাড়াই করা সম্ভব।
কোন ড্রোনগুলো ইসরায়েল ব্যবহার করেছিল? রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েল মধ্যম-পাল্লার হার্মেস ড্রোন ব্যবহার করেছিল, যা গোয়েন্দা ও নজরদারির জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, বিস্ফোরক বোঝাই FPV (ফার্স্ট-পার্সন ভিউ) মিনি-কোয়াডকপ্টার ড্রোনও পাঠানো হয়েছিল, যা আকারে ছোট কিন্তু মুহূর্তেই ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে সক্ষম। ইরান এর আগেও আমেরিকার RQ-170 ড্রোনকে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে নতুন স্টিলথ ড্রোন তৈরি করেছে, তাই এই ইসরায়েলি ড্রোনগুলো তাদের হাতে আসা নেতানিয়াহুর জন্য বড় চিন্তার কারণ।
ইরান এই ড্রোনগুলো তৈরি করলে কী হবে? যদি ইরান এই ড্রোনগুলো রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং করে উৎপাদন করতে সক্ষম হয়, তাহলে FPV এবং ফিক্সড-উইং ড্রোনগুলো ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারবে। বিশেষ করে কাঠের-ধাতুর মিশ্রণে তৈরি এয়ারফ্রেমগুলো ইসরায়েলের রাডারকে অকার্যকর করতে পারে। হার্মেসের মতো ড্রোনগুলো দীর্ঘ পাল্লার গুপ্তচরবৃত্তি চালাতে পারবে এবং ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রগুলোর ওপর নজর রাখতে পারবে। S-171 সিমোর্গ-এর মতো ড্রোনগুলো বিমান হামলা, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে সহায়তা করতে পারে। এই প্রযুক্তি ইরানকে শুধু সামরিকভাবে শক্তিশালীই করবে না, বরং তারা এই ড্রোন বিক্রি করে বিপুল অর্থ উপার্জনও করতে পারবে।